
‘কেমন ক্যাম্পাস চাই’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলে চবিকে শিক্ষা, গবেষণা ও নান্দনিকতায় পূর্ণ মডেল ক্যাম্পাসে গড়ে তোলা সম্ভব।
৩ নভেম্বর, রবিবার সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্রের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশসম্পন্ন নান্দনিক ক্যাম্পাস হিসাবে গড়ে তোলে যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরির কারখানা হিসাবে গড়ে তোলা হবে। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করলে এটি সম্ভব। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল স্টেকহোল্ডার হলো শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এই দুই পক্ষ যদি তাদের দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হয়, তাহলে আর কোনো কিছুই লাগে না। শিক্ষার্থীরা তাদের দায়িত্ব পালন করবে, শিক্ষকরা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন। এটা হলে বাকি সব এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. শামীম উদ্দিন খান ও মাননীয় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী। প্যানেল আলোচকের বক্তব্য রাখেন ড. মো. শহীদুল হক। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা নানা পরামর্শ, প্রস্তাব ও দাবি-দাওয়া তুলে ধরে মতামত পেশ করেন। সভা পরিচালনা করেন লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর মমতাজ উদ্দিন আহমদ।
চবি উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের জন্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা- কর্মচারীদের জন্য নয়। সুতরাং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার মান উন্নয়নের যত সুযোগ সুবিধা প্রয়োজন, সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের এমন বিশ্ববিদ্যালয় বানাতে হবে, যেটা আমি সত্যিকার অর্থে বিশ্ববিদ্যালয় বলতে পারবো। এখন আমরা কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাই না। বিশ্ববিদ্যালয় হতে হবে যোগ্য মানুষ তৈরির কারখানা। এখানে খারাপ হয়ে ঢুকলেও যাতে ভালো মানুষ হয়ে বের হয়, সে রকম পরিবেশ ও ব্যবস্থা করতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে প্রফেসর ড. এনায়েত উল্যা পাটোয়ারী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা কেমন ক্যাম্পাস চায়, সেটা নিয়ে আজকের এই আয়োজন। আমাদের শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস চায়, লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি চায় না, ছাত্র সংসদভিত্তিক ক্যাম্পাস চায় শিক্ষার্থীরা। আমরাও সেরকম ক্যাম্পাস চাই।
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন হওয়া দরকার। বিশেষ করে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে। এর কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাচ্ছে। তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে আবেদনও করতে পারছে না।
প্যানেল আলোচকের বক্তব্যে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক কেমন ক্যাম্পাস চাই, সেই প্রেক্ষিতে অনেকগুলো দাবি পরামর্শ আকারে তুলে ধরেন। এছাড়া বক্তব্যে চবি দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোজাম্মেল হক চারটি পরামর্শ দেন। লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. আমির মোহাম্মদ নসরুল্লাহ প্রত্যেকটা বিভাগে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা চালু করার পরামর্শ দেন। পরীক্ষার সিস্টেমটা আধুনিক করার পরামর্শ দেন এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তাছলিম উদ্দীন।
এসময় শিক্ষার্থীরা কর্মচারীদের অসহযোগিতা, তাদের টাইপিং না জানা, ট্রেনের শিডিউল সম্পর্কে মতামত, হলে ২০ টাকার অতিরিক্ত ফি, লাইব্রেরিতে বই নিতে জটিলতা এবং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ই-মেইল আইডি দেয়ার ব্যাপারে মতামত তুলে ধরেন। শুধু কথায় নয়, যাতে কার্যকর হয় সেই দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
বিবার্তা/মহসিন/এনএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]