জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৪, ১৯:১৪
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বর্ণাঢ্য আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৪ উদ্‌যাপন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।


৮ মার্চ, শুক্রবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়।


বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রীতি সম্মিলনে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এমপি, ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদসহ বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত নারী নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।


বিকাল ৪টায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শান্তির পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া রাতে নারী জাগরণের গান পরিবেশন করে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়।


অনুষ্ঠানে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমাদের সকল বিজয়ের পেছনে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছেন তার পেছনেও রয়েছেন তার সহধর্মিনীর অনুপ্রেরণা। ওই সময় অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন রকমের বক্তব্য দেয়ার জন্য। কিন্তু বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব যেটি বলেছেন তিনি সেটিই করেছেন। আজকে সমাজে নারীরা অনেক এগিয়ে রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার শেখ হাসিনার হাত ধরে নারী আজ সাফল্যের শীর্ষে রয়েছেন।’


সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘নারীরা আজ সকল ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাচ্ছেন। পাইলট থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। সমাজে নারীদের সঙ্গে সমঝোতা করে এগোতে হয়। তারা আর পিছিয়ে নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যার হাত ধরে নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীতে এমন কোনো কিছু নেই যেটা নারী ছাড়া হয়। আমাদের নারীদেরকে হাত ধরে এগিয়ে দিয়েছেন একজন শেখ হাসিনা। এখন আমাদের কাজটা করে যেতে হবে। ছোট বেলা থেকে আমাদের চারপাশে শক্ত-পোক্ত যে দেয়ালগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো ভেঙে চুড়ে বের হয়ে আসতে হবে। প্রযুক্তি নারীকে শিখতেই হবে। কারণ এই বিশ্বটাতেও নারীকে নিজের জায়গা করে নিতে হবে। নারী-পুরুষ সকল মানুষের বৈষম্য দূর করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঞ্চনাহীন, শোষণহীন একটি বাংলাদেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রতি এই নারী দিবসে শ্রদ্ধা।’


সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘সামাজিক অনুশাসনের বহু কিছু যখন ভেঙে পড়ে, তখন নারী শাসন-স্নেহে সমাজের অগ্রসরতা ও উন্নয়নের পথ দেখায়। সুতরাং নারীর ভূমিকা যে শুধু মাতৃত্বে সেটি নয়। নারীর ভূমিকা আজ নেতৃত্বে, সৃজনশীলতায় ও দক্ষতায় সুপ্রতিষ্ঠিত। আমাদের নারী দিবসের বার্তা হবে সমভাবে ক্ষমতায়ন নয়, বরং নারী যেন আরও অধিক ক্ষমতায়ন হয়। তাহলে সমাজ আরও বেশি অগ্রসর হবে সেটিই প্রমাণিত। সেকারণে এটি শুধুমাত্র পাওয়ার স্ট্রাকচার দিয়ে দেখার বিষয় নয়। বরং তার যে যোগ্যতার জায়গা সেই যোগ্যতম জায়গাটিতে তিনি যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তেমন সামাজিক সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে। আমরা নারী-পুরুষ ভেদাভেদের মধ্যদিয়ে নয় বরং মানুষ হিসেবে সহযাত্রীর পথকে অবারিত করে যেন মুক্ত পৃথিবী, আধুনিক বাংলাদেশ, অগ্রসর সমাজ তৈরি করতে পারি।’


মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই বাংলাদেশ সৃষ্টি না হলে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হতো না উল্লেখ করে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন না হলে নারী মুক্তির আস্বাদন থেকে আমরা হয়ত আজও দূরে থাকতাম। সেকারণে বাঙালির গেরিলা যোদ্ধারা আজও অর্থনৈতিক মুক্তির গেরিলা সংগ্রামী। যেখানেই জঙ্গিবাদ, যেখানে নারী নির্যাতন, যেখানে অশুভ কিছু- তার বিরুদ্ধে সুন্দরের সকল শক্তি দিয়ে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলায় আমরা দূর প্রতিজ্ঞ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে ‘ভাইয়েরা আমার’ বলে সকল নারী-পুরুষ-কৃষক-শ্রমিক সব শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তিনি নারী-পুরুষে ভেদাভেদ না করে ভাইয়েরা আমার শব্দটির মধ্যে সকলকে এক সূতায় বেঁধেছেন, সাড়ে সাতকোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। নারী দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক- নারী মুক্তির জায়গায় আমরা সকলে মিলে কাজ করবো। আধুনিক, অগ্রসর বাংলাদেশ তৈরি করবার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরলস পরিশ্রম করে প্রিয় মাতৃভূমিকে গড়ে তুলবো।’


নারী দিবসের আয়োজনে আরও বক্তব্য প্রদান করেন সংসদ সদস্য সানজিদা হক, সংসদ সদস্য কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু, অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাসিমা খান মন্টি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নাসিমা বানু, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবা নাসরিনসহ দেশের বিভিন্ন পেশায় প্রতিষ্ঠিত নারী নেতৃত্ব। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, দপ্তর প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com