ডুয়েটে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ উদ্‌যাপন
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪, ১৬:০৯
ডুয়েটে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ উদ্‌যাপন
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেক্ষাপটে ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস’ উদ্‌যাপিত হয়েছে।


৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার দিবসটি উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে দশটায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দেয়ালে স্থাপিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।


এরপর ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ’-এর তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা ও বঙ্গবন্ধুর ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ’ প্রচার করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান।


এ সময় তিনি বলেন, নিপীড়িত-নির্যাতিত বাঙালিদের মুক্তির মহামন্ত্র ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ’। বঙ্গবন্ধুর সেই মর্মস্পর্শী বজ্র নিনাদ সাত কোটি বাঙালির হৃদয়কে বিদ্যুৎ গতিতে আবিষ্ট করেছিল। এ ভাষণ শুধু বাংলাদেশেই নয়; বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এবং মুক্তিকামী মানুষের অনুপ্রেরণা হিসেবে যুগ যুগ ধরে টিকে থাকবে।


তিনি আরও বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের প্রেক্ষাপট দীর্ঘদিনের, যা জাতির পিতার দীর্ঘ এক আন্দোলন ও সংগ্রামের ফসল। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অমর বাণী। এই ভাষণের মধ্য দিয়েই একটি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়েছিল সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য। তিনি কালজয়ী এই ভাষণের বৈশিষ্ট্যগুলোর বর্ণনায় বাঙালির সংগ্রামের ঐতিহ্য, বঞ্চনার ইতিহাস, গণতান্ত্রিক চেতনা, আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার, শান্তির বাণী, মানবতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং আক্রান্ত হলে প্রতিরোধের মতো কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিয়ে আলোচনা করেন।


আলোচনা অনুষ্ঠানে উপাচার্য ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, সেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে যাওয়ার পূর্বে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সঙ্গে পরামর্শ করেন। উপাচার্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ‘কিছু স্মৃতি কিছু কথা’ বই থেকে উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, শেখ হাসিনার ভাষায় ‘আমি মাথার কাছে, মা মোড়াটা টেনে নিয়ে আব্বার পায়ের কাছে বসলেন। মা বললেন, মনে রেখ তোমার সামনে লক্ষ মানুষের বাঁশের লাঠি। এই মানুষগুলোর নিরাপত্তা এবং তারা যেন হতাশ হয়ে ফিরে না যায় সেটা দেখা তোমার কাজ। কাজেই তোমার মনে যা আসবে তাই তুমি বলবা। কারও কোনো পরামর্শ দরকার নেই। তুমি মানুষের জন্য সারা জীবন কাজ করো, কাজেই কী বলতে হবে তুমি জানো। এত কথা, এত পরামর্শ কারও কথা শুনবার তোমার দরকার নেই। এই মানুষগুলোর জন্য তোমার মনে যেটা আসবে সেটা তুমি বলবা।’


উপাচার্য বলেন, সেদিনের ভাষণে তারই প্রতিফলন ঘটেছে। এটি কেবল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অপার শক্তির উৎস, মূলমন্ত্র বা দিক-নির্দেশনা নয়, এটি গোটা বিশ্বের অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছে। এই ভাষণ শুনে গোটা বাঙালি জাতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে।


তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনে দীক্ষিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।


এছাড়া তিনি অগ্নিঝরা এই মার্চ মাসে ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁদের পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।


অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ। এ সময় তিনি ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ উল্লেখ করে এর প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।


এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ঘটনাবহুল জীবন ও কর্ম তুলে ধরে চিত্র প্রদর্শনী, ‘৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ’-এর উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও উন্নত রাষ্ট্রের ভাবনা’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা এবং ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুলের উদ্যোগে রচনা প্রতিযোগিতা।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com