জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ রোভার ব্যাডেন পাওয়েলও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে উঠুক। তাদের মুখে মুখে বাংলাদেশ উজ্জ্বল হোক।

তিনি বলেন, স্কাউটস আন্দোলন ও রোভার আন্দোলন দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলুক। ব্যাডেন পাওয়েল আর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একসূত্রে গাঁথা বিশ্বজনীন মানুষ হও তোমরা।

৫ মার্চ, মঙ্গলবার রোভার পল্লী বাহাদুরপুর গাজীপুরে ‘সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকার, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বে রোভার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে চলা ৫ দিনব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী রোভার মুট ২০২৪ এর মহাতাঁবু জলশা ও সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

উপাচার্য বলেন, আজকে সেই তরুণ-তরুণী স্মার্ট যার হাতে তথ্য আছে। শুধু স্মার্ট মোবাইল থাকলে হবে না। একজন রোভার হিসেবে তথ্যের অবগাহন নিশ্চিত করতে হবে। সেই তথ্য হবে বিজ্ঞানের, উৎকর্ষতার, প্রযুক্তির, শিল্পের, সাহিত্যের। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের রোভার বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। দক্ষতায়, যোগ্যতায় তাদেরকেও ছাড়িয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের সামনের পথ শুধুমাত্র স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রী হিসেবে নিজেকে বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবার পথ। এর বাইরে কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর অন্য দেশের যে তরুণ নিজেকে প্রস্তুত করছে তোমার দৃপ্ত শপথ হবে তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। তাকে ছাড়িয়ে যেতে হলে বিজ্ঞানে, চিন্তায়, উৎকর্ষতায়, মানবিকতায়, মেধা, মননে, শিল্পে সকল জায়গায় নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। একজন রোভারকে দেখে যেন গোটা দেশের মানুষ মুগ্ধ হয়।

ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, একজন সাধারণ মানুষ একজন স্কাউটসকে দেখলে যেন মনে করে তার পাশে একজন বিশ্বস্ত বন্ধু আছে, যে তাকে সহযোগিতা করবে, ভালোবাসবে, শ্রদ্ধা করবে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। বাংলাদেশকে অপূর্ব সুন্দর মহিমায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়, সুস্থ সংস্কৃতির আবহে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন নিয়ে বাংলাদেশ আরও উচ্চকিত হোক, যেন বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। বিশ্ববুকে আমরা মানবিক অনন্য বাংলাদেশের স্বপ্নচূড়ায় পৌঁছাবে তোমাদের সফলতার মধ্য দিয়ে। স্কাউটস আন্দোলন, রোভারের এই অতন্দ্র প্রহরীর কাজ করা দেশমাতৃকাকে ভালোবাসা। আর নিজেদের মান, সম্মান ও আত্মমর্যাদা বাড়ানোর এই লড়াইয়ে বাঙালি সবসময়ই বিজয়ী হোক, বিশ্বনন্দিত হোক।

বাংলাদেশ স্কাউটস, রোভার অঞ্চলের সভাপতি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।

অনুষ্ঠানে প্রধান স্কাউট ব্যক্তিত্ব হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রধান জাতীয় কমিশনার ও দুদকের সাবেক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, রোভার পল্লীতে হাজারো প্রাণের মেলা বসেছে। আমি এর জন্য কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করতে চাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যাঁর হাত ধরে বাংলাদেশে রোভার স্কাউটের পথচলা শুরু। ধন্যবাদ দিতে চাই জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা ও স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যার অপরিসীম অবদান রয়েছে রোভার স্কাউটের আজকের এই সাফল্যের পিছনে।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে স্মার্ট নাগরিক হয়ে তৈরি হতে হবে। আমাদের ভিতরে আনতে হবে সহমর্মিতা, মননশীলতা, সৃজনশীলতা ও সহযোগিতার মনোভাব। নিজেদেরকে সকল দিক থেকে দক্ষ হিসেবে তৈরি করতে হবে। এই সকল বৈশিষ্ট্য তৈরিতে স্কাউটিং এর ভূমিকা অপরিসীম।

উল্লেখ্য, এ রোভার মুটে দেশের প্রায় ৭০০টি রোভার স্কাউট ইউনিট অংশ নেয়। এ সমাবেশে ৫ হাজার ২০০ রোভার, ১ হাজার রোভার স্কাউট লিডার ও ৪০০ জন স্বেচ্ছাসেবকসহ ৬ হাজার ৬০০ জন স্কাউট ও স্কাউটার অংশগ্রহণ করেছে। এতে রোভাররা ৬টি চ্যালেঞ্জ ও ৭টি অ্যাকটিভিটিতে অংশগ্রহণ করে।

মহাতাঁবু জলসা ও সমাপনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ৫ দিনে অনুষ্ঠিত হয় ৫টি পুনর্মিলনী ও ২টি বিশেষ অনুষ্ঠান। চ্যালেঞ্জ ও অ্যাকটিভিটিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে রোভাররা তাদের স্কাউটিং দক্ষতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শনের সুযোগ পায়। সমাপনী অনুষ্ঠানে ছিল বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা রোভারদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের শেষে ১৬টি দলকে দেয়া হয় সেরাদের সেরা পুরস্কার।

বিবার্তা/এমজে