
সার্বজনীন বাংলা ভাষা প্রচলন করতে আমাদের একটি ভাষানীতি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিষারদ মিলনায়তনে ‘সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার ও ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভাষানীতি করতে বাংলা একাডেমি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, সার্বজনীনভাবে বাংলা ভাষা প্রচলনে আমাদের প্রয়োজন একটি ভাষানীতি।
বাংলা একাডেমি সেটি গ্রহণ করতে পারে। ভাষানীতিতে দুটো দিক থাকবে। একটি অবয়ব-পরিকল্পনা আরেকটি মর্যাদা-পরিকল্পনা। মর্যাদার পরিকল্পনায় আমাদের দেশ থেকে কেও আন্তর্জাতিক কোনো সভা, সেমিনারে গেলে বাংলায় কথা বলবে নাকি ইংরেজিতে কথা বলবে এর সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে।
অবয়ব পরিকল্পনায় ইংরেজি কোন কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারবে, সংস্কৃতি ভাষার কোন শব্দ ব্যবহার করতে পারবে, কোন পর্যন্ত আমরা যেতে পারি এসব কিছু বস্তু তো অর্থে এই অবয়বের মধ্যে থাকবে। এজন্য প্রয়োজন একটি ভাষানীতি।
জাপান অর্থনৈতিক ভাবে উন্নতির পেছনে তাদের দেশের সবক্ষেত্রে জাপানী ভাষা ব্যবহার করে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান যখন বুঝতে পেরেছে অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত হতে হলে জ্ঞান বিজ্ঞানে তাদের মায়ের ভাষাকে ব্যবহার করতে হবে। তারা সর্বত্র সে কাজটি করেছে।
পৃথিবীর অন্য দেশে যে জ্ঞান বিজ্ঞান সৃষ্টি হয়েছে সেটি তাদের নিজের ভাষায় তারা রূপান্তর করেছে। যেখান থেকে তাদের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। জাপান যদি পারে তাহলে আমরা কেন পারব না।
ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন বিষয়ক অনেক গ্রন্থেই বঙ্গবন্ধু যথামর্যাদায় উপস্থাপিত নন। অথচ বিশ্লেষণী চোখ দিয়ে দেখতে গেলে আমরা এই আন্দোলনের নেপথ্যের কারিগররূপে বঙ্গবন্ধুকেই পাই।
বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে এই দিনটি সবার আগে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রতিবাদের স্মারক, যার সূচনা ঘটেছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার কিছুকাল পরেই। সেইসঙ্গে, এতে যুক্ত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর তারুণ্যদীপ্ত দূরদর্শী মেধা, কৌশল ও প্রতিবাদী চেতনা। তাই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন কী প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে বায়ান্নতে এসে জনমানুষের অসাম্প্রদায়িক প্রতিবাদের অলোকসামান্য ক্ষেত্রে পরিণত হলো- সেই প্রশ্নের উত্তরের মাঝেই এই আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]