ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ১৯৭১ সালে যেমন পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা হয়েছিল সেভাবেই আজ হত্যা করা হচ্ছে ফিলিস্তিনের যারা বুদ্ধিজীবী।
১০ ডিসেম্বর, রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে গাজায় বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, গাজায় আজকে যেভাবে মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির পরেও তারা বিরতিতে আসেনি। প্রথমে তারা বলেছিল তারা যুদ্ধ বিরতিতে আসবে কিন্তু পরে তারা আসেনি। এবং গতকালকে যুদ্ধ বিরতি প্রসঙ্গে জাতিসংঘের যে সাধারণ অধিবেশন ছিল ১৫টি রাষ্ট্রের মধ্যে ১৩টি রাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির পক্ষে তাদের ভোট দিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিয়েছে, যুক্তরাজ্য কোনো ভোটে আসেনি। এর থেকে প্রমাণিত হয় ইসরায়েল মাঠ পর্যায়ে যুদ্ধ চালাচ্ছে কিন্তু এর পেছনে রসদ যোগাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার কারণে জাতিসংঘ যুদ্ধ বিরতির প্রসঙ্গে যে অধিবেশন করে সেটায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেটো প্রদান করেছে। এই পর্যন্ত যতগুলো হত্যা হয়েছে তার মধ্যে ৭০% হলো নারী আর শিশু।
তিনি আরও বলেন, গতকাল ফিলিস্তিনের একজন কবিকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি কবিতা লিখে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সাহস যোগাতেন। ১৯৭১ সালে যেমন পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদেরকে হত্যা করা হয়েছিলো সেভাবেই আজ হত্যা করা হচ্ছে ফিলিস্তিনের যারা বুদ্ধিজীবী। যারা বিশ্বজনমত সৃষ্টি করছে তাদেরকে আজ হত্যা করা হচ্ছে।
মানববন্ধনে ফার্মেসি অনুষদের সীতেশচন্দ্র বাছার বলেন, গাজায় ইতিমধ্যে প্রায় বাইশ হাজারের মত নারী এবং চার হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এই যুদ্ধ তাদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখন অনেকেই মানবাধিকারের কথা বলে আমাদের একটা প্রশ্ন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান করেছিলো তাদেরকে যারা মদদ দিয়েছিলো তখন মানবাধিকার কোথায় ছিল?
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত রয়েছে গাজার বিশ লক্ষ মানুষ। ইতিমধ্যে বিশ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে যাদের বেশির ভাগই নারী এবং শিশু। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে গাজার এক ইঞ্চি জায়গাও ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ না। কাজেই এই দমন, নিপীড়ন, শোষণ, নির্যাতন ও ঔপনিবেশিক শাসন বন্ধ করতে হবে। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ল্যাটিন আমেরিকা থেকে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আমরা মনে করি ফিলিস্তিনকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে, শোষণ নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জিনাত হুদার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ এবং শিক্ষক সমিতির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
বিবার্তা/ছাব্বির/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]