পরীক্ষার দাবিতে বিভাগীয় অফিস ও প্রধান ফটকে তালা দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
২৫ নভেম্বর, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে পরীক্ষার দাবিতে বিভাগের করিডোরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে কোন সমাধান না পাওয়ায় দুপুর ২ টায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা দেন তারা।
এদিকে, একইদিন সকালে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগ কর্তৃক প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৩১ অক্টোবর পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তবে পরীক্ষা এর আগে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন এ ব্যাচের ১ম বর্ষের নন ক্রেডিট কোর্সে ৭ জন ফেল করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, কোন শিক্ষার্থী নন ক্রেডিট পরীক্ষায় ফেল করলে ২য় বর্ষের মধ্যে তাকে সেই কোর্সে পাশ করতে হবে। ২য় বর্ষের মধ্যে পাশ করতে অপারগ হলে ৩য় বর্ষে প্রমোশন পাবেন না তিনি। এদিকে ২য় বর্ষে পাশ না করলেও ভুলবশত তাদেরকে ৩য় বর্ষে প্রমোশন দেয় কর্তৃপক্ষ। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, যদি কোন শিক্ষার্থী ২য় বর্ষে নন ক্রেডিট কোর্সে পাশ করতে না পারে। সেক্ষেত্রে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি স্বাপেক্ষে নিজ খরচে উক্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, অক্টোবরের ২য় সপ্তাহে বিভাগের সভাপতির সাথে কথা বলে ননক্রেডিট কোর্সের পরীক্ষা প্রদানের জন্য আবেদন করেন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা।
এদিকে প্রায় একমাস পরে ১১ নভেম্বর শিক্ষকের সাথে আলোচনাক্রমে ননক্রেডিট পরীক্ষা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করে বিভাগটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ১১ তারিখ বিভাগ থেকে একটি আবেদন পাঠিয়েছিল। ভিসি স্যার উপস্থিত না থাকায়, পরে গত পরশু সেই ফাইল নিয়ে ভিসি স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। এসময় ভিসি স্যার বলেছেন, উপ উপাচার্য ও বিভাগের সভাপতিকে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করে উপাচার্যের কাছে আসতে বলেন।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বিভাগীয় সভাপতিকে এবিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাদেরকে শনিবার বিভাগে আসতে বলেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২৫ নভেম্বর,শনিবার তারা বিভাগে আসলে সভাপতি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছি।’
সভাপতির বক্তব্যে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস না পেয়ে বিভাগীয় অফিসে তালা দেন তারা। পরে দুইটার দিকে শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা শেষেও কোন সমাধান না পাওয়ায় প্রধান ফটক অবরোধ করেন তারা।
এসময় আগামীকাল আলোচনা করে সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামীকাল এবিষয়ের সমাধান না হলে আবারো আন্দোলনে নামবেন তারা।
এবিষয়ে বিভাগীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নন ক্রেডিট কোর্সের আবেদন করার পরই আমি বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির মিটিং ডেকেছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত শিক্ষক উপস্থিত না হওয়ার ফলে আমরা মিটিং করতে পারিনি। পরে আবারো মিটিং ডেকে ১১ নভেম্বর প্রশাসনের কাছে পরীক্ষার অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলাম।’
পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চাওয়া পূরণ করতে পারছিলাম না এ কষ্ট থেকে আমি পদত্যাগ করেছিলাম। পদত্যাগ করার পর আমি জানতে পারলাম যে ভিসি স্যার আমাকে প্রোভিসি স্যারের সাথে কথা বলতে বলেছে। তবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে দরকার পড়লে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করবো।’
বিবার্তা/জায়িম/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]