বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করলেও পোষ্য কোটাধারীদের ভর্তির দাবিতে ৫ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্মকর্তা সমিতি।
৫ আগস্ট, শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তারা এই কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এছাড়া দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন কর্মকর্তারা। এর আগে গত ২৬ জুলাই একই দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
এদিকে কর্মকর্তাদের পোষ্য কোটার আন্দোলনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে এ দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে শাখা ছাত্রলীগ।
জানা যায়, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৩০ নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গুচ্ছ কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও নৃ-গোষ্ঠী, হরিজন দলিত, খেলোয়াড় ও পোষ্য কোটাধারীদের ভর্তির জন্য একই পাস নম্বর নির্ধারণ করা হয়। সকলের জন্য একই পাস নম্বর নির্ধারণ করায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করলেও পোষ্য কোটাধারীদের ভর্তির দাবিতে গত ২৬ জুলাই কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তা সমিতি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার ৫ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এছাড়া বিকেল দুইটায় শিক্ষকবাহী বাস অবরোধ করেন কর্মকর্তারা।
সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, সাধারণ শিক্ষার্থী ও পোষ্য কোটাধারীদের জন্য একই শর্ত (পাশমার্ক) নির্ধারণ করা হয়েছে। তাহলে কোটার সুবিধা কোথায় থাকলো? হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম যোগ্যতায় ভর্তি করালে আহামরি কোনো ক্ষতি হবে না।
কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এ টি এম এমদাদুল আলম বলেন, ‘পোষ্য কোটাধারীদের শর্ত কমিয়ে ভর্তি, চাকরীর বয়সসীমা ৬২ করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম প্রণয়নসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছি। আগামীকাল আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখবো।’
এ দিকে কর্মকর্তা সমিতির পোষ্য কোটার আন্দোলনের বিরোধিতা করে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- নির্দিষ্ট মার্ক না পেলে কাউকে ভর্তি না করানো, পরিবহন ভোগান্তি নিরসন, সার্টিফিকেট উত্তোলনে ভোগান্তি কমানো, অনলাইন রেজাল্টের মাধ্যমে মার্কশিট উত্তোলনে অযৌক্তিক খরচ নিরসন, ই-ব্যাংকিং সেবা চালু ও দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতকরণ।
পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের দাবি উপস্থাপন করেন। এসময় উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
উপাচার্যের কার্যালয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী কামাল হোসেন বলেন, কর্মকর্তারা দু-দিন পর পর কর্মবিরতিতে যান, তারা বলেন তাদের সন্তানরা ভর্তি পরীক্ষায় শূন্য পেলেও ভর্তি করাতে হবে। কর্মকর্তাদের অযৌক্তিক দাবির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মান যেন ক্ষুণ্ন না হয়। কর্মকর্তারা কর্মবিরতিতে যায় আর শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ে। আমাদের এসব ভোগান্তি কমাতে হবে।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘কর্মকর্তাদের দাবি করার ব্যাপারে আমাদের কোন আপত্তি নেই কিন্তু তাদের চেয়ে শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব অনেক বেশী। এখানে মূল হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।’
বিবার্তা/জায়িম/সউদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]