শিরোনাম
শেকৃবিতে ভিসির দায়িত্বে রেজিষ্টার, ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২৩:২১
শেকৃবিতে ভিসির দায়িত্বে রেজিষ্টার,  ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) রেজিস্ট্রারকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। তারা এ ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদার পরিপন্থি বলে অভিহিত করেছেন।


মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নূরে আলম আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শামীমা বেগম এক বিবৃতিতে রেজিস্ট্রারকে উপাচার্যের রুটিন পদে দায়িত্ব দেয়ার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।


বিবৃতিতে তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান সৃষ্টির স্থান। কাজেই একজন প্রতিথযশা শিক্ষাবিদ হবেন এর প্রধান, যিনি জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান সৃষ্টির নেতৃত্বদানের মাধ্যমে জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন।কিন্তু একজন কর্মকর্তার পক্ষে এ কাজটি কোনভাবেই সম্ভবপর না। উপাচার্যের দায়িত্ব হিসেবে শেখ রেজাউল করিমের নিয়োগাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও মর্যাদার সম্পূর্ণ পরিপন্থি।এ ধরনের নিয়োগাদেশ বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার ‘অপচেষ্টা’।


শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের শূন্য পদে দ্রুত প্রথিতযশা অধ্যাপকদের নিয়োগের দাবিও জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।



একই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শিক্ষক সমিতি। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকালে বাকৃবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমীন বারি ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. এনামুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবাদ জানানো হয়।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক স্মারকলিপিতে শেকৃবির উপাচার্যের মেয়াদপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য রুটিন দায়িত্ব প্রদান শিরোনামে একটি আদেশ জারি করা হয়।


এতে শেকৃবির উপাচার্য পদ শূন্য থাকায় রেজিষ্ট্রার শেখ রেজাউল করিমকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালনের আদেশ প্রদান করা হয়। শেখ রেজাউল করিম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে একজন উপাচার্যের মত মর্যাদাসীন পদে বসানো বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী।



এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব প্রদানে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবিলম্বে এই আদেশনামা প্রত্যাহার করে একজন স্বনামধন্য অধ্যাপককে শেকৃবির উপাচার্য পদে নিয়োগ দেয়ার জোর দাবি জানানো হয়।


এদিকে মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইব শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা আহ্সান হাবীব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানো হয়।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উচ্চ শিক্ষার দিগন্ত প্রসারে ও নিত্যনতুন গবেষণার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেশ তথা জাতি বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন ও নীতিমালার আলোকে একজন অধ্যাপক উপাচার্য হিসেবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন এবং শিক্ষা ও গবেষণা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে যথাযথ উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।


অন্যদিকে একজন রেজিস্ট্রার শুধুই একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তাকে দিয়ে উপাচার্যের দায়িত্ব পালনের আদেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব দেয়ায় জাককানইবি শিক্ষক সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।


বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দ্রততম সময়ে এই আদেশ প্রত্যাহার করে একজন স্বনামধন্য অধ্যাপককে অনতিবিলম্বে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রদানের দাবি জানানো হয়।


একই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলদলও বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বুধবার ( ২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববদ্যালয়ের নীলদলের আহবায়ক প্রফেসর ড.আহসান বিন হাবীব ও সদস্য সচিব প্রফেসর ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে উপাচার্যের মতো মর্যাদাসীন পদে বসানো বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী এবং ষড়যন্ত্রমূলক।



উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মেয়াদপূর্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিমকে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালনের আদেশ প্রদান করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এ ঘটনায় শিক্ষক মহল থেকে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া আসছে।


বিবার্তা/রাসেল/আবদাল

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com