নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ কেন্দ্রে গত ১১ মে থেকে শুরু হয় করোনার নমুনা পরীক্ষা। বেশকিছু সঙ্কট আর সমস্যা নিয়েই কেন্দ্রটিতে শুরু হয় নমুনা পরীক্ষা। শুরুর দিকে সঙ্কট কম থাকলেও ধীরে ধীরে সঙ্কট বাড়তে থাকে।
কেএননাইন্টিফাইভ মাস্ক, পিপিই, ফেইসশিল্ডসহ বেশকিছু সুরক্ষা সামগ্রী অভাব রয়েছে এই কেন্দ্রটিতে। সূদূর যুক্তরাষ্ট্র থেকেই সুরক্ষা সামগ্রীর অভাবের বিষয়টি জানেন বিশ্ববিদ্যালয়টির চতুর্থ ব্যাচের ফার্মেসি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মো. তানভীর মুরাদ।
এরপর তিনি নিজ উদ্যোগে ইউএসএ স্ট্যান্ডার্ড ৪০০ ইউনিট কেএননাইন্টিফাইভ মাস্ক, ১০০ ইউনিট ফেইসশিল্ড, ৫০০ ইউনিট সার্জিক্যাল মাস্ক, ১০ ইউনিট পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট(পিপিই) পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে তিনি সব সুরক্ষা সামগ্রী যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে কুরিয়ার করেছেন। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে এসব সুরক্ষা সামগ্রী নোবিপ্রবিতে পৌঁছাবে বলে নিশ্চিত করেছেন তানভীর মুরাদ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তানভীর মুরাদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ঋণ কিছুটা শোধ করার চেষ্টায় ১০০০ মেডিকেল ইকুইপমেন্ট প্রেরণ করেছি। নোয়াখালী বিজ্ঞান এবং প্ৰযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অন্যতম বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ ব্যাচের একজন প্রাক্তন ছাত্র। আমার ছাত্রজীবনে আমি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকারি ছাত্র হলে থেকেছি। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। নোয়াখালীর মানুষের অতিথেয়তা আমাকে মুগ্ধ করেছে সব সময়। তাই নোয়াখালী তথা নোবিপ্রবির প্রতি আমার ভালোবাসা অফুরান।
যখন জানলাম নোয়াখালীর সবচেয়ে বড় করোনা টেস্টিং সেন্টারে পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব তখন আমি সাথে সাথে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ স্যারের সাথে যোগাযোগ করি। স্যার বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নিজস্ব করোনা টেস্টিং কিটের উদ্ভাবক। স্যার আমাকে কেএননাইন্টিফাইভ মাস্কের সঙ্কটের কথা জানান।
পরবর্তীতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো কিছু ছোটভাইয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারি ল্যাবটিতে পিপিই, ফেইসশিল্ডসহ বেশকিছু সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব আছে। এই ল্যাব বন্ধ হয়ে গেলে নোয়াখালী অঞ্চলের এক কোটি মানুষের করোনা টেস্টিং হুমকির মুখে পড়বে। তাই আমি দেরি না করে এসব মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করি।
বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমার অনেক ঋণ। কিছুটা ঋণ শোধ করার চেষ্টাই এই অতি সামান্য উপহার বাংলাদেশের মানুষের জন্য। আল্লাহ আমাদের সকলকে ভালো থাকার তৌফিক দান করুক। ভালো থাকুক নোয়াখালী এবং নোবিপ্রবি, ভালো থাকুক প্রিয় বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, তানভীর মুরাদ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে বসবাস করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামব্রিজ কলেজ থেকে এমবিএ এবং নিও হ্যাম্পশায়ার ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র হতে মাস্টার্স ইন ইনফরমেশন টেকনোলজি সম্পন্ন করে বর্তমানে পিএইচডি করছেন। তিনি বোস্টনে বাংলাদেশে বাংলাদেশী পরিচালিত মসজিদ 'ইসলামিক সোসাইটি অফ নর্থ শো' সহ বোস্টনের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত। বাংলাদেশিদের সব চেয়ে বড় সংগঠন বেইন এর বিপুল ভোটে নির্বাচিত অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল সেক্রেটারি। এছাড়াও তার নিজস্ব বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
বিবার্তা/ইতি/এসএ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]