
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিল করে ২০১২ সালে। কিন্তু শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে কোনোরূপ বৈদেশিক ঋণ, সাহায্য ছাড়াই নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত সর্ববৃহৎ প্রকল্প স্বপ্নের পদ্মা সেতু। দেশের অর্থে নির্মিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। দৈর্ঘ্যের দিক থেকে সুইডেনের অল্যান্ড ব্রিজকে পেছনে ফেলে বিশ্বের ১২২তম অবস্থানে এসেছে পদ্মা সেতু।
পোশাক আর ক্রিকেটের পাশাপাশি বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করছে পদ্মা সেতু। প্রবাসীরা এই বিজ্ঞাপনের গর্বিত অংশীদার। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের জন্য বড় আশীর্বাদ।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের মর্যাদা ও সক্ষমতার প্রতীক। ‘দেশ স্বাধীন করার সময় যেভাবে গোটা জাতি এক হয়েছিল, সেভাবে পদ্মা সেতুর জন্যও দেশে-বিদেশে সবাই এক হয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় যেভাবে দেশের মানুষ তার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন, ঠিক সেভাবেই এখন দেশের মানুষ পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। স্বাধীনতার পর একমাত্র পদ্মা সেতুর জন্যই আবারও গোটা জাতি এক হয়েছে।
পদ্মা সেতু কেমন গুরুত্ব বহন করে সেটি যদি একটু অনুসন্ধান করেন তাহলে জানতে পারবেন-
১) পদ্মা সেতুর ফলে কৃষি পণ্য আনা-নেয়ায় সুবিধা বাড়বে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে।
২) এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। পদ্মা সেতু মুন্সিগঞ্জের লৌহজং ও শরীয়তপুর-মাদারীপুরকে সংযুক্ত করবে।
৩) পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ মিটার। প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। এটি দুই স্তর বিশিষ্ট সেতু। স্টিলও ব্যবহার করা হয়েছে এই সেতু নির্মাণে।
৪) মূল সেতুতে মোট ৪২ টি পিলার, ৪১ টি স্প্যান রয়েছে। পদ্মা সেতুর উপরে সড়ক এবং নিচে রেল পথ।
৫) পদ্মা সেতু নির্মাণে কাজ করেছে দেশ-বিদেশের ২৭ জন ইঞ্জিনিয়ার ও ১৩ হাজার শ্রমিক।
৬) পদ্মা সেতু ২১টি জেলাকে সংযুক্ত করবে। বৃহত্তর বরিশাল জেলাকে একত্রিত করবে রাজধানী ঢাকার সাথে।
৭) পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। এর ফলে বেকারত্ব দূর হবে। নির্মিত হবে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান।
৮) পদ্মা সেতুর উপরের সড়ক ৪ লেইন বিশিষ্ট। যা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে যোগাযোগকে দ্রুততর করবে।
৯) সুবিশাল এই সেতুর নকশা এইসিওএমের (AECOM) নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরামর্শকদের নিয়ে গঠিত একটি দল তৈরি করেছে।
১০) দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকার সাথে যোগাযোগের সময় ২ থেকে ৪ ঘণ্টা কমে যাবে।
১১) রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, কাঁচামাল সরবরাহ এবং শিল্পায়ন সহজতর করতে সহায়তা করবে।
১২) দক্ষিণের জেলাসমূহের বার্ষিক জিডিপি ২.০ শতাংশ এবং দেশের সামগ্রিক জিডিপি ১.২ শতাংশের বেশি বাড়াতে সাহায্য করবে।
১৩) ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। সেতুর দুই পাশে গড়ে তোলা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্ক ও বেসরকারি শিল্প শহর। ফলস্বরূপ, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়বে।
১৪) সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা প্রতি বছর ৭-৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ ৬৭ হাজার যানবাহন চলাচল করবে।
বিবার্তা/ইসমাইল হোসাইন রায়হান/রোমেল/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]