
দৌলতদিয়া পতিতা পল্লিতে শ্বাসরোধ করে যৌনকর্মী সুমি ওরফে মিতা (২৫) হত্যা মামলার তিন আসামি কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার পাইকশা মাঝাইল গ্রামের আমদ সরদারের ছেলে আব্দুল কাদের (২৪), নিচুনপুর গ্রামের মো. জয়নাল শেখের ছেলে রাসেল শেখ (২০), পাইকশা মাঝাইল গ্রামের মাজহারুল শেখের ছেলে মুরাদ শেখ (২২)।
নিহত যৌনকর্মী সুমী ওরফে মিতা ঢাকা জেলার দোহার উপজেলায় চৈতা বারাত নারিশা গ্রামের কাদের ফকিরের মেয়ে। সে যৌনপল্লির জাহাঙ্গির ও দবিরের বাড়ির দোতলায় একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন জানান, মিতা গত পাঁচ মাস যাবত দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে তিনটি রুম ভাড়া নিয়ে যৌন ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। গত ৭ অক্টোবর রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মিতা প্রতিদিনের ন্যায় অজ্ঞাতনামা তিনজন পুরুষকে রাত্রিযাপনের জন্য মদের বোতলসহ তার রুমে নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদপ্রাপ্ত হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ সুমির হাত-পা বাধা লাশ তার রুম থেকে উদ্ধার করে এবং লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ রাজবাড়ি সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
তদন্তে জানা গেছে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগণ ওইদিন আনুমানিক রাত দেড়টার পর থেকে একই তারিখ সকাল ৮ টার মধ্যে যে কোন সময় মিতাকে হাত পা বেধে গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পর জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল কাদের কে ঢাকা মেট্রোর সূত্রাপুর থেকে, রাসেল শেখ ও মুরাদ শেখ কে ঢাকা জেলার আশুলিয়া বিশমাইল হতে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের নিকট থেকে মিতার (মৃত) ব্যবহৃত হাতের ব্রেসলেট ও ১ টি টিকলি, আসামি কাদেরের নিকট থেকে মিতার ব্যবহৃত হাতের ব্রেসলেট এবং লুণ্ঠিত ১৪ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ১ হাজার ৬৫৫ টাকা এবং আসামিদের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন আরও জানান, দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে মিতা হত্যাকাণ্ড ছিল একটি সম্পূর্ণ ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড। আমরা আমাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব দ্রুততার সাথে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন সহ তিন জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে আজ ২২ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামীরা এ ঘটনায় নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শরীফ আল রাজীব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মুকিত সরকার, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আব্দুল মতিন, সহ-সভাপতি কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু, রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি হেলাল মাহমুদ সহ জেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/মিঠুন/এনএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]