নির্বাচন কমিশন ঘোষিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ হবে আগামী ৮ মে বুধবার। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ভোটারদের মন জয় করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা।

এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের প্রধান দুই দল এবার রাজনৈতিক বা দলগতভাবে ভোটের মাঠে নেই। তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘নৌকা’ প্রতীকবিহীন দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। অপরদিকে বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনও বর্জন করেছে। ফলে এই নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকও নেই। কিন্তু এ উপজেলায় বিএনপি’র এক নেতা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হওয়ায় ওই নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন লড়ছেন। নির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠেছে। উপজেলার প্রতিটি রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে, বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টার টানানো হয়েছে।

প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করছেন। পাশাপাশি ভোটারদের আকৃষ্ট করতে উন্নয়নসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তারা।

চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মো. আমিনুল ইসলাম বাদশা (দোয়াত কলম), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় (আনারস), উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. ফারুক আহমেদ (মোটরসাইকেল), উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক একেএম ছামেদুল হক (ঘোড়া) ও মো. সরোয়ার বাহাদুর লাল (কাপ পিরিচ)।

গতকাল শুক্রবার উপজেলার পাইকুড়া বাজারে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত পথসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় এ উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের অবদানের কথা উল্লেখ এবং নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। এবারের নির্বাচনেই প্রথম প্রার্থী হয়েছেন এ নেতা।

অপরদিকে উপজেলার পাইকুড়া বাজারেই রাতে সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মো. আমিনুল ইসলাম বাদশা তার কর্মী ও সমর্থক নিয়ে বিশাল এক মিছিল বের করেন। পরে মিছিল শেষে পথসভায় উপজেলা পরিষদের এ উপজেলার উন্নয়নে তার ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এসময় বাদশা বলেন, ভোটাররা যেভাবে সাড়া দিচ্ছেন, তাতে এবারও তিনি নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ভোটারদের দিচ্ছেন নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. ফারুক আহমেদ গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার আয়নাপুর বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। পরে ওই বাজারে অনুষ্ঠিত পথসভায় বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, গতবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন। এবার ভোটারদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন। তাই এবারের নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।

উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক একেএম ছামেদুল হক ও মো. সরোয়ার বাহাদুর লাল উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গণসংযোগ করছেন। নির্বাচনি প্রতীকসহ কাগজ ভোটারদের মধ্যে বিলি করছেন।

তবে সাধারণ ভোটাররা বলছেন, তারা সব প্রার্থীকে বিচার-বিশ্লেষণ করে যাকে এলাকার উন্নয়নের জন্য যোগ্য মনে হবে, তাকেই ভোট দেবেন।

এবারের নির্বাচনে ৫৫টি ভোট কেন্দ্রের ৩৬৫টি ভোট কক্ষে ৭৫ হাজার ১৩৭ জন পুরুষ, ৭৬ হাজার ৮৯২ জন নারী ও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন।

বিবার্তা/জাহিদুল/সউদ