ফেব্রুয়ারিতে ১০৫১ টাকা, মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিল ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা!
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:১৭
ফেব্রুয়ারিতে ১০৫১ টাকা, মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিল ৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় মোহাম্মদ তাহের সওদাগর নামে এক গ্রাহকের মুদি দোকানে এক মাসের বিদ্যুৎ বিল এসেছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩১ টাকা! সর্বশেষ মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিল এটি।


যদিও এর আগের মাসে ফেব্রুয়ারিতে তাঁর বিদ্যুৎ বিল ছিল মাত্র ১ হাজার ৫১ টাকা। তবে চলতি বছরের মার্চে এটি দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩১ টাকায়! তাঁর দোকানে শুধুমাত্র বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর একটি মিটার রয়েছে।


সম্প্রতি কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ধোপ পোলের গোড়া (১নং ওয়ার্ড) আল নুর এন্টারপ্রাইজ দোকানে এ ঘটনা ঘটে।


তথ্যমতে, গ্রাহকের মার্চ মাসের বিল নম্বরটি ছিল-২৭১৮৪১৪৬। ইস্যু তারিখ গত ১৮ মার্চ। বুক নম্বর-৩০৬। পিআরভি একাউন্ট নম্বর-ই-৩৯৭৮। কনজুমার নম্বর-২৫৮৩২৪১৫, মিটার নম্বর-১০৫৬০৯২৭। বর্তমান রিডিং-৫৬৩৭১ ইউনিট। পূর্বের ইউনিট-৪৬৪৩১। কনজুম ইউনিট-৯৮৪০। ভ্যাট ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ২৭৩ টাকা। মোট বিল ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩১ টাকা।


অথচ গ্রাহকের ফেব্রুয়ারির মাসের বিল লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ভ্যাটসহ মোট বিল ছিল মাত্র ১ হাজার ৫১ টাকা। যার বিল নম্বর ছিল-২৭১১৭৫৫০। ইস্যু তারিখ ছিলো ১৮ ফেব্রুয়ারি। ওই মাসের বর্তমান রিডিং দেখানো হয়েছিল ৯৮৪০ ইউনিট। পূর্বের রিডিং ছিল ৯৭৭০ ইউনিট। কনজিউম ইউনিট ছিলো মাত্র ৭০ ইউনিট। এই ৭০ ইউনিট বিদ্যুৎ এর প্রতি ইউনিটের মূল্য ধরা হয়েছে ১৩ টাকা করে।


ভুক্তভোগী গ্রাহক মো. তাহের, আল নুর এন্টারপ্রাইজ দোকানের মালিকের বিলের কপি দেখে স্থানীয় লোকজনের মাঝে নানা আলোচনা সমালোচনাে সৃষ্টি হয়েছে। পিডিবি অফিসে গিয়ে উক্ত গ্রাহক দেখেন, এ রকম অনেককে ভুতুড়ে বিল দিয়েছেন। যারা তাঁর মতো অভিযোগ জানাতে গেছেন।


এদিকে মিটার মালিক ও তার পরিবার সূত্র জানিয়েছে, এর আগে কখনো এ ধরনের বিল আসেনি। দোকানে তেমন বাল্ব বা বড় ধরনের ইলেকট্রনিকস মেশিনও নেই যে, এত টাকার বিল আসবে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেখে তিনি চমকে যান। কারণ বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখানো হয়েছে ১৫/২০ ইউনিট। নির্ধারিত সময়ে বিল পরিশোধও রয়েছে। কোন মাসের বকেয়া নেই। অথচ বিলটিতে এক্সিকিউটিভ বা রেসিডেন্টের কথা বলা রয়েছে।’


তিনি আরও জানান, ‘দোকানের আলাদা মিটার রয়েছে। কোনো পার্শ্ব সংযোগ দেওয়া নেই। পাশাপাশি ছোট্ট দুই দোকানে এক মিটার। এক জমিদার। পিডিবির এমন ভুতুড়ে বিলে তাঁর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।’


এ ব্যাপারে একই এলাকার বাসিন্দা আজগর আল পাপ্পু বলেন, 'বিদ্যুৎ বিল তৈরি করার সময় নোট করে ক্যালকুলেশন করে ইউনিট বের করে তারপর বিল লেখা হয়। বিলে অন্তত দুজন কর্মকর্তার সই থাকে। তাঁরা হয়তো কিছু দেখেনি। আমি বলবো পিডিবির লোকদের বিল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে আরও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।'


এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর মইজ্জ্যারটেক উপ কেন্দ্রের বিল প্রস্তুতকারী রনির মুঠোফোনে একাধিকবার কল ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।


তবে এ প্রসঙ্গে পটিয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আ. স. ম. রেজাউন নবী বলেন, ‘কোন গ্রাহক যেন হয়রানির শিকার না হয়। এত টাকার বিল কীভাবে আসলো, বিষয়টি যাচাই বাছাই করতে বিল প্রস্তুতকারককে জানানো হবে। যদিও এখনো পর্যন্ত কেউ আমাকে বিষয়টি জানায়নি। যে গ্রাহকের বিলে এমন হয়েছে তার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে।’


বিবার্তা/জাহেদ/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com