চুয়াডাঙ্গায় মরুর উষ্ণতা, জনজীবনে অস্বস্তি
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:২১
চুয়াডাঙ্গায় মরুর উষ্ণতা, জনজীবনে অস্বস্তি
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টানা চতুর্থ দিনের মতো চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে জেলাজুড়ে অনুভূত হচ্ছে ‘মরুর উষ্ণতা’। ভ্যাপসা গরমে জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে।


১৯ এপ্রিল, শুক্রবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সে সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৯ শতাংশ।


বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে সর্বোচ্চ। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।


গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় জেলায় সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।


আর বুধবার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, সন্ধ্যা ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করে ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে সারা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।


আর মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিন জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করলো।


তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। প্রচণ্ড দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারণে গায়ে ঘাম বসে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।


এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মকালীন ছুটির আগেই গরমে ছুটির দাবি করেছেন কেউ কেউ। দাবদাহের ব্যাপারে ইতিমধ্যে অধিদপ্তরে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। তবে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি।


চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তারা বলছেন, বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে। গত বছরের ১৯ ও ২০ এপ্রিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা অতি তীব্র দাবদাহ। বৃষ্টি না হলে গত বছরের রেকর্ড এবার ভেঙে যেতে পারে।


জেলার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া অ্যাজমা, হাঁপানিসহ শ্বাসকষ্টের রোগীদের ভোগান্তি বেড়েছে।


চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে দাবদাহ চলাকালে ভাজা-পোড়া, চা-কফি ও কোমল পানীয় এড়িয়ে বেশি বেশি পানি, খাওয়ার স্যালাইনসহ তরল খাবার খেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


কামারের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করা জলিল মিয়া বলেন, আমাদের কাজই হলো আগুন নিয়ে। গত দুই-তিন ধইরে যেমন গরম লাগছে তাতে এক-দুই ঘণ্টার বেশি কাজ করতে পারছি না। গরমে আমিই হাঁপিয়ে যাচ্ছি।


কৃষক মান্নান বলেন, চাষের পাশাপাশি বাড়িতি বেশ কয়েকটা গোরু পালি। ঘাস কাটতে গিয়েছিলাম মাঠে কিন্তু গরমে মাঠে টিকতে পারলাম না। তাই বাড়িতে চলে যাচ্ছি। আল্লাহ বৃষ্টি দাও।


এদিকে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে চলমান দাবদাহে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গার প্রচণ্ড দাবদাহের বিষয়টি অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি।


বিবার্তা/আসিম/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com