৫ হাজার টাকার এলইডি বাতি ২৭ হাজারে কিনেছে রেলওয়ে: দুদক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৬:২৪
৫ হাজার টাকার এলইডি বাতি ২৭ হাজারে কিনেছে রেলওয়ে: দুদক
চট্টপগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রেলেওয়ের যন্ত্রাংশ ক্রয়ে বড় রকমের দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে বিভিন্ন দফতরে গিয়ে যন্ত্রাংশ ক্রয়ে অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধান করেন তারা। বাজারে যেসব এলইডি বাতির দাম যেখানে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা, সেখানে রেলওয়ে সেসব বাতি কিনেছে ২৭ হাজার টাকায়।


বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) চট্টগ্রামে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে এমন প্রমাণ পায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।


জানা গেছে, দুদক টিম ট্র্যাক সাপ্লাই কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন এবং এবং কাটিং জ্যাক ক্রয় সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে। এতে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি এবং পিপিআরের সুস্পষ্ট লংঘন বলছে দুদক। মূলত ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুইটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। যা প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কীসের উপর ভিত্তি করে এসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্টস পায়নি দুদক।


এরপর দুদক টিম বৈদ্যুতিক প্রকোশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট এবং এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করে। সেগুলোর ক্রয় সংক্রান্ত ডকুমেন্টস সংগ্রহ করার জন্য জন্য সিওএস এর দপ্তরে যায়। সেখান থেকে ডকুমেন্টস সংগ্রহ পর্যালোচনা করে দুদক টিম দেখে, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। যা অসংগতিপূর্ণ বলছে দুদক। একই টিম পরে পাহাড়তলীতে অবস্থিত রেলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালায়। সেখানে অবস্থিত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আরএ্যান্ডআই এর মেরামতকৃত কক্ষ পরিদর্শন করেন। ওয়াকিটকি ক্রয় সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।


অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, রেলওয়ের বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ৯০টি এলইডি লাইট ও এলইডি ল্যাম্প কেনার তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেগুলোর ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহের পর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিটি এলইডি লাইট ২৭ হাজার ৭০০ টাকায় কেনা হয়েছে, যেগুলোর দাম বাজারে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা।


এনামুল হক বলেন, রেলওয়েতে লিফটিং জ্যাক, ড্রিলিং মেশিন ও কাটিং জ্যাক ক্রয়সংক্রান্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে দেখা যায়, এই পণ্যগুলোর প্রাক্কলিত দর ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সেখানে এই পণ্যগুলো ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার অধিক ব্যয়ে কেনা হয়। যা পিপিপি ও পিপিআরের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।


দুদকের সহকারী পরিচালক আরো বলেন, পাহাড়তলীতে রেলওয়ের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ও জেলা সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখানে অভিযোগসংশ্লিষ্ট আরঅ্যান্ডআইয়ের মেরামত করা কক্ষ পরিদর্শন করা হয়। এসময় ওয়াকিটকি ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়।


জানা গেছে, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে একই ঠিকানায় নিবন্ধিত দুটি প্রতিষ্ঠানকে দরপত্রে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে তাদের মধ্যে একটিকে কার্যাদেশ দেয়া হয়।


এই অনিয়ম প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়। এছাড়া বাজারমূল্য নির্ধারণ কমিটি কিসের ওপর ভিত্তি করে ওইসব পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করেছে, সেসব সংক্রান্ত কোনো তথ্যউপাত্ত পায়নি দুদক।


এছাড়া আরও কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এগুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।


বিবার্তা/লিমন

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com