শূন্যরেখার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের স্কুল ও জনবসতিতে
প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ২০:২২
শূন্যরেখার রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের স্কুল ও জনবসতিতে
বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কোণারপাড়ার শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে মায়ানমারের সশস্ত্র দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি এবং ক্যাম্পে আগুনের পর এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় আশ্রয় শিবিরে আগুন দেওয়ার পর ৫-৬শ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের এপারে তুমব্রু এলাকার দুটি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন গ্রাম ও সীমান্তের ওপারে অবস্থান নেয় আরো দেড় হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী। পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় শূন্যরেখায় ফিরতে পারেনি তারা। হাজারখানেক রোহিঙ্গা শূন্যরেখায় থেকে গেলেও তারা আতংকে রাত কাটিয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবারও থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন তুমব্রু বাজারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা।


তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়া শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জানান, গত বুধবার সকালে মিয়ানমারের সশস্ত্র গ্রুপ রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সশস্ত্র গোষ্ঠী সদস্যরা নাইক্ষ্যংছড়ির কোনারপাড়া শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়সংলগ্ন এলাকায় এসে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে তা শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরেও ছড়িয়ে পড়ে। বিকালে আশ্রয় শিবিরে আগুন লাগিয়ে দিলে আশ্রয়শিবির ছেড়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। শীতের এই সময়ে অনেকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে।


বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ও ৯টায় কিছু রোহিঙ্গা পুড়ে যাওয়া বসতি এলাকায় ফিরে যাওয়ার জন্য দুইবার চেষ্টা করে। কিন্তু ওপার থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ছোড়া গুলির কারণে পুনরায় এপারে চলে আসে রোহিঙ্গারা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বিবার্তাকে জানান, ২০১৭ সালে যেভাবে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছিল ঠিক একইভাবে শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে স্কুলে থাকতে দিয়েছে। প্রশাসনের পরবর্তী সিদ্ধান্তের পর তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এই বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বিবার্তাকে বলেন, শূন্যরেখার কিছু পরিবার তুমব্রু স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে আবার কিছু মিয়ানমারের ওপারে চলে গেছে শুনলাম। এ ব্যাপারে কী করা যায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা চলছে। এখনও পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।


এর আগে গত বুধবার সকাল সাড়ে ৫টার পর থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে মিয়ানমারের সশস্ত্র দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে হামিদ উল্লাহ (২৭) নামের রোহিঙ্গা তরুণ নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে মুহিব উল্লাহ (২৫) নামের একজন আহত হয়েছেন।


প্রসঙ্গত ২০১৭সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে এসে দুদেশের মধ্যবর্তী শূন্যরেখায় আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। বর্তমানে ওই ক্যাম্পে ২২১পরিবারের ৪ হাজার ২৮০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে।


বিবার্তা/নয়ন/রোমেল/এমএইচ


সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com