২০২৩ সালটি হতে পারতো তামিম ইকবালের জন্য স্মরণীয় একটি গল্প লেখার দৃশ্যপট। যা তিনি নিজ হাতেই দূরে ঠেলে দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে ওয়ানডে সুপার কাপে পয়েন্ট টেবিলের তিনে উঠে এসেছিল বাংলাদেশ। সেই তামিমকে ছাড়াই বিশ্বকাপ দল ভারত গেল। সবকিছু ঠিক মনে হলেও কোথাও যেন কি নেই। কেন হলো এমন? সবমিলিয়ে সেসব ধোঁয়াশা কাটাতে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশবাসীকে খুলে বলেন ঠিক কি হয়েছিল তার সাথে।
সব অপেক্ষার অবসান হলো বিকেল সোয়া ৫টায়। নিজের ফেসবুক পোস্টে দেয়া ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের পর মানসিকভাবে আমি খুব খুশি ছিলাম। গত চার-পাঁচ ম্যাচের যত বিষয় সব ভুলে গিয়েছিলাম। ম্যাচ শেষে আমার ইনজুরির অবস্থা ফিজিওকে জানাই। তখন ড্রেসিংরুমে নির্বাচকরা আসেন। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার অবস্থা সামনে এমনই থাকবে। আমাকে দলে রাখলে বিষয়টি মাথায় রাখবেন। হোটেলে যাওয়ার পর আমাকে ফিজিও পর্যবেক্ষণ করেন।
তামিম জানান, ফিজিওর রিপোর্টে কী ছিল তাও পরিষ্কার করে দেন তিনি। ফিজিও’র রিপোর্টে ছিল প্রথম ম্যাচের পরে আমার ব্যথার অবস্থা কী, দ্বিতীয় ম্যাচের পর কী হয়েছে। সেক্ষেত্রে ২৬ তারিখ, মঙ্গলবার (নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচ) ম্যাচের দিন অবস্থা কেমন হতে পারে। রিপোর্ট অনুযায়ী, খেলার জন্য আমি প্রস্তুত। তবে আমাকে বলা হয়েছিল আমি রেস্ট নিতেও পারি।
কিউইদের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে রেস্ট নেওয়ার বিষয়ে দেশসেরা ওপেনার বলেন, শেষ ম্যাচটায় রেস্ট নিলে সেক্ষেত্রে আমার প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য রিহ্যাভ হয়ে যেত এবং বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচও আমি খেলতে পারবো এমনটা ছিল রিপোর্টে। আমি কোথাও বলিনি যে, পাঁচটা ম্যাচ খেলবো বা পাঁচ ম্যাচ খেলতে পারবো। এটা মিথ্যা। জানিনা কিভাবে এটি মিডিয়াতে ছড়ানো হয়েছে। শুধু তিন নির্বাচককে জানিয়েছিলাম আমি ফিট না, দল ঘোষণার সময় যেন এটা মাথায় রাখেন।
তামিম আরো জানান, আমি নিশ্চিত কালকে নান্নু ভাইও কথাটা ক্লিয়ার করছে। আমি জানি না এই কথাটা মিডিয়াকে খাওয়ানো হলো বা কে করছে, কিন্তু এই জিনিস একদমই মিথ্যা। যে জিনিস আমি নির্বাচকদের বলেছিলাম যে আমার শরীর এরকমই থাকবে। এখন যেরকম অবস্থায় আছে। আমার ব্যথা থাকবে। আপনারা যখন দলটা নির্বাচন করবেন, তখন এটা মাথায় রাখবেন। আমি কোনো কন্ট্রোভার্সি চাইনি। বিশ্বকাপের মাঝেও যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে, তাই যাতে কোনো ঝামেলা না হয় তাই আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম।
বিসিবির পক্ষ থেকে মিডল অর্ডারে খেলার প্রস্তাবও দেয়া হয় বলে জানান তামিম, বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করে আমাকে বললো, ‘তুমি বিশ্বকাপে যাবা, কিন্তু তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। একটা কাজ কর, তুমি প্রথম ম্যাচ খেলিও না। আমি বলেছি, এখনো ১২/১৩ দিন সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে তো আমি ভালো অবস্থায় থাকব। তো কি কারণে খেলব না? তখন বললো, আচ্ছা তুমি যদি খেল তাহলে আমরা পরিকল্পনা করছি, তুমি নিচের দিকে খেলবা। তাদের প্রস্তাব শুনে আমি তো অবাক, জিজ্ঞেস করলাম এটা কোন ধরনের কথা। এরপর বলা হলো মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করানোর কথা। অথচ আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে খেলে আসছি। আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে, ইচ্ছে করে। এটা ঠিক হলো এখন নতুন আরেকটা জিনিস বলি। এটা আমি অনুভব করেছি। এসব নোংরামি, আমি কোন নোংরামির মাঝে থাকতে চাই না। এরপর ব্যক্তিগত নানা জায়গা থেকেও আমাকে এসব কথা বলা হলো, আরো যোগ করেন তামিম।
বিবার্তা/পুলক/লিমন
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]