
বিশ্বকাপের নকআউট পর্ব আজ শনিবার (৩ ডিসেম্বর, ২০২২) থেকে শুরু হয়েছে। প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র। খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় শুরু হয়েছে ম্যাচটি। যার সরাসরি দেখা যাবে বিটিভি, গাজী টিভি ও টি স্পোর্টসে।
বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট দল নেদারল্যান্ডস। যারা এর আগে তিন-তিনবার ফাইনাল খেলেছে। সেমিফাইনাল খেলেছে একবার। আর কোয়ার্টার ফাইনাল একবার। তবে শক্তিমান এই দলটি ২০১৮ সালে অবশ্য সুযোগই পায়নি খেলার। এক আসর পর আবার এসেছে বিশ্বকাপে তারা। কিন্তু এখনো সেরা ছন্দটি খুঁজে পায়নি তারা। যদিও ‘এ’ গ্রুপে দুই ম্যাচ জিতে ও এক ম্যাচ হেরে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলোতে এসেছে। আজ সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র। তারা আন্ডারডগ হিসেবে বিশ্বকাপে এসেও শেষ ম্যাচে ইরানকে হারিয়ে বি গ্রুপ থেকে জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলোতে।
তবে এখানেই তারা থামতে চায় না। সন্তুষ্ট থাকতে চায় না শেষ ষোলোতে খেলেই। তারা চোখ রেখেছে আরও দূরে, একেবারে ফাইনাল পর্যন্ত। অবশ্য গ্রুপপর্বে তারা যে পারফরম্যান্স করেছে তাতে আরও পথ পাড়ি দেওয়া তাদের জন্য অসম্ভব কিছু নয়। প্রথম ম্যাচে তারা দুর্দান্ত খেলে ১-১ গোলে রুখে দেয় ওয়েলসকে। পরের ম্যাচে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে রুখে দেয় গোলশূন্য ড্রয়ে। আর শেষ ম্যাচে ছন্দে থাকা ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়ে আট বছর পর আবার জায়গা করে নিয়েছে শেষ ষোলোতে।
যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় নেদারল্যান্ডস নিঃসন্দেহে তারকাসমৃদ্ধ দল। তবে সমীহ করতে হবে মার্কিন তরুণ স্ট্রাইকার কোডি গাকপোকে। এই ফরোয়ার্ড গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই গোল করেছেন। আজও তিনি ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিতে চাইবেন।
নকআউট পর্বে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষের এই ম্যাচটিকে যুক্তরাষ্ট্রের কোচ গ্রেগ বারহল্টার দেখছেন সুযোগ হিসেবে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চান আরও সামনে, ‘আমাদের জন্য এটা দারুণ একটা সুযোগ। যোগ্য দল হিসেবেই আমরা এই জায়গায় এসেছি। আর এখান থেকে আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এই ম্যাচ খেলেই আমরা দেশে ফেরার বিমান ধরতে চাই না।’
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারব্যাক ওয়াকার জিমেরম্যান তো ফাইনালে চোখ রাখার বিষয়টিও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘গ্রুপপর্ব পেরিয়েছি আমরা। তবে গ্রুপপর্ব পেরোনোই আমাদের এক মাত্র লক্ষ্য ছিল না। আমরা জানতাম বিশ্বকাপ জেতার একটাই পথ, আর সেটা হলো নকআউট পর্বে ওঠা। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপ পেরিয়েছি আমরা। এখন আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাথা উঁচু করে আমরা কাতারে থাকতে চাই। আর সেটার জন্য ম্যাচ বাই ম্যাচ ধরে এগোতে হবে আমাদের।’
এদিকে সবচেয়ে বেশিবার ফাইনাল খেলেও শিরোপা জিততে না পারা ডাচরাও খুব করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাধা টপকে কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে। কোচ লুইস ফন গালের তত্ত্বাবধানে হল্যান্ডও পাড়ি দিতে চায় বহুপথ। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষের ম্যাচকে সামনে রেখে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি এই কোচ, ‘প্রত্যেকেরই ভিন্ন মত থাকে। আমার মতও ভিন্ন হতে পারে। সুতরাং, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
তবে দলটির মিডফিল্ডার মার্টেন এলকো ডি রুন জানিয়ে দিয়েছেন কতোদূর যেতে চান তারা, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো পরের রাউন্ডে যাওয়া। তবে আমরা এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ খেলছি না। অবশ্যই, আমরা সবার বিপক্ষে খেলে এবং প্রত্যেকের বিপক্ষে ৫-০ ব্যবধানে জিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। তবে এটি এতো সহজ নয়। আজকের (শনিবার) ম্যাচে আমরা জয় চাই। তবে সেই জয়টা কিভাবে আসলো সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। প্রয়োজনে পেনাল্টি কিকের মাধ্যমেও আসুক, কিন্তু জয় চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাল ম্যাচ না খেলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতেও আমার আপত্তি নেই। ইতিবাচক বিষয় হলো আমরা গ্রুপপর্বে হারিনি। এটি আমাদের দারুণ আত্মবিশ্বাস দিতে পারে। আর সেই আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান হয়ে আমরা আরও ভাল পারফরম্যান্স করতে পারি।’
বিশ্বকাপে অবশ্য নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাষ্ট্র এর আগে কখনো মুখোমুখি হয়নি। ১৯৯৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তারা পাঁচটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল। তার মধ্যে নেদারল্যান্ডস জিতেছে চারটিতে। একটিতে জিতেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালের সেই একমাত্র জয়ের ম্যাচে ৪-৩ গোলে জিতেছিল দ্য ইয়াঙ্কসরা। এবারও কি তারা এমন কিছু উপহার দিতে পারবে? নাকি খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে কমলা রঙের উৎসব হবে?
বিবার্তা/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]