
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের যাত্রী হয়রানির অভিযোগ উঠেছে কুলিদের বিরুদ্ধে। গত ৮ মে রবিবার সরকারের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে হয়রানি করেছে বলে তিনি বিবার্তাকে জানিয়েছেন। সাধারণ যাত্রীদের নিয়মিত হয়রানি করা হয় বলে জানা যায়। মালামাল টানার নামে যাত্রীদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায়ের অভিযোগও আছে টার্মিনালের কুলিদের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাবতলী বাস টার্মিনালে হয়রানির শিকার হওয়া সরকারের এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিবার্তাকে বলেন, গত ৮ মে রবিবার বাড়ি থেকে ফেরার পথে আমার ব্যাগ ছিল বাসের বক্সে। গাবতলী বাস টার্মিনালে নামার পরে বাসের হেলপার ব্যাগ নামিয়ে দেয়। পরে টার্মিনালের কুলি এসে টাকা দাবি করে। কুলিরা অকারণে বাসের অন্যান্য যাত্রীদের কাছ থেকে ৪০-৫০ টাকা করে আদায়ও করেছে।
তিনি বলেন, ব্যাগ বহন না করেই জোর করে টাকা নিতে চেষ্টা করে কুলিরা। আমার ব্যাগ সিএনজিতে উঠাতে বাঁধা দেয় তিন/চারজন কুলি। ঘটনাস্থল থেকে আমি সিটি করপোরেশনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে ফোন দিলে তারা (কুলি) সবাই পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনই আমার মতো অনেক যাত্রী কুলিদের কাছে হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমি এর আগেও কয়েকবার এমন ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি।
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের তথ্য কেন্দ্র সূত্রে কুলি মজুরি সম্পর্কে জানা যায়, ফল সবজি চাল ডালের প্রতি বড়-ছোট ঝুড়ি বা কার্টুন ২০ থেকে ৪০ টাকা। আর অন্যান্য কার্টুন প্রতি ২০ টাকা। ফার্নিচার-লাগেজ প্রতিটি ১০০ টাকা করে।
আজ ১১ মে বুধবার সরজমিনে গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে যাত্রীদের হয়রানি করার বিষয়ে সত্যতাও পাওয়া যায়।
গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের দিগন্ত পরিবহনের চালক মাসুদ রানা বিবার্তাকে বলেন, ভুক্তভোগি আমরাও। ওরা আমাদের কাছ থেকেও টাকা নেয়। এরপর যাদের একটু নরম ভদ্র পায় তাদের সাথে জোর জুলুম করে। এখানে যাত্রীদের কুলি দরকার না হলেও কুলিরা জোর করে টাকা নিতে চায়।
অন্য এক বাসের হেলপার রইস উদ্দিন বলেন, একদিন আমার সামনেই যাত্রীর কাছ থেইকে টাকা নিলো। ওই যাত্রীর কাছে তেমুন কোনো মাল আছিলো না। এহানে ওরা এমন করবই, কিছু করার নাই।
বাস টার্মিনালের এক দোকানদার বিবার্তাকে বলেন, এখানে ছোট হোক বড় হোক কোনো ব্যাগ বা বোঝা নিয়ে ঢুকলেই কুলিরে টাকা দিতে হইবো। এটা বৈধ। কারণ বাস টার্মিনাল কোটি কোটি টাকা দিয়ে ইজারা নেওয়া।
বাস টার্মিনালেরর সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিবার্তাকে বলেন, এটা উত্তর সিটি করপোরেশনের ইজারাধীন। এখানে সর্বনিম্ন একটা লেবার চার্জ দিতে হয়। এই চার্জের চার্ট, সে অনুযায়ী দিতে হয়। এখানে জোর করে নেয়ার কিছু নাই । আর যদি কোনো লেবার জোর করে নেয় তাহলে যাত্রীরা ৯৯৯ বা এখানে পুলিশ ফাঁড়ি আছে অভিযোগ দেয়ার জন্য। এসব জায়গায় অভিযোগ করলে তারা সরাসরি ব্যবস্থা নিব।
যাত্রীদের হয়রানি করার বিষয়ে তিনি বলেন, কুলিরা যদি টার্মিনালের ভিতরে যাত্রী হয়রানি করে তাহলে আমরা দেখব। আর যদি বাইরে করে তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না।
যাত্রীদের কাছ থেকে কুলিরা জোর করে বা অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয় গাবতলী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের ইজারাদার রাফি ট্রেডার্স লিমিটেডের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বিবার্তাকে বলেন, আমরা আসার পর থেকে যাত্রীদের সাথে যাতে হয়রানিমূলক কিছু না হয় সেই জন্য সব সময় মনিটরিং করতেছি এবং যাত্রীদের হয়রানি করলে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি ।
তিনি বলেন, এরকম হওয়ার কথা না। আমাদের চার্টের বাইরে কুলি বা লেবারদের টাকা নেওয়ার কথা না। যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে পানিশমেন্টের ব্যবস্থা আছে। আমরা এদেরকে কঠোর হাতে দমন করি।
বিবার্তা/তাওহিদ/রোমেল/এসএফ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]