পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভা ৪ ফেব্রুয়ারি
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:০১
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সেন্ট মার্টিনে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভা ৪ ফেব্রুয়ারি
পর্যটন ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা সেন্ট মার্টিনে সভা করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। 


আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি দ্বীপটিতে থাকা জেলা প্রশাসনের তথ্য ও সেবাকেন্দ্রে কমিটির ৩৩তম সভা ডাকা হয়েছে।


জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির ৩৩তম বৈঠকে কক্সবাজার জেলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনশিল্পের অধিকতর উন্নয়ন, বিকাশ, সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া কক্সবাজার বিমানবন্দরে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হবে।


সংসদ সচিবালয়ের কমিটি শাখা-৫–এর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কমিটির সব সদস্য সভায় থাকবেন। এই কমিটির সভাপতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। সদস্যরা হলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন, কাজী ফিরোজ রশীদ, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান, শেখ তন্ময়, সৈয়দা রুবিনা আক্তার ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ।


বৈঠকে সাচিবিক সহায়তা দিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোশারফ হোসেন মোল্লার।


কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর একান্ত সচিব হুমায়ুন কবীর, উপপরিচালক (রিপোর্টিং) সেলিম মৃধা ও কমিটি শাখা ৫–এর কর্মকর্তা খুর্শিদা খাতুনও সফরসঙ্গীর তালিকায় রয়েছেন।


কমিটি জানিয়েছে, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করাই তাঁদের লক্ষ্য। সরেজমিনে পরিদর্শন করে তাঁরা দ্বীপটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবেন।


জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ২০০ নম্বর ধারায় বলা আছে, জাতীয় সংসদের সীমার মধ্যে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসবে। প্রয়োজন হলে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বাইরে সভা করা যাবে।


প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সুরক্ষায় রয়েছে ১৪ বিধিনিষেধ। এতে বলা হয়েছে, দ্বীপে কোনো ধরনের পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। তবে সেন্ট মার্টিনে এখন ভবন আছে ১৩৮টির বেশি। অথচ মাত্র চার বছর আগে ২০১৮ সালে এ ধরনের স্থাপনা ছিল মাত্র ৪৮টি। অর্থাৎ এই চার বছরে ৯০টির মতো স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। এখনো কমপক্ষে ৩০টি স্থাপনার নির্মাণকাজ চলছে।


সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল। সেটা নিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট মার্টিনের একটি আবাসিক হোটেলের সম্মেলনকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এতে সভাপতিত্ব করেন।


বিগত বছরগুলোতে এমন আরও অনেক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা কাগজেই রয়ে গেছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক ও এক শিক্ষার্থীর এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়, ১৯৮০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৩৮ বছরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে প্রবাল প্রজাতি ১৪১টি থেকে কমে ৪০টিতে নেমেছে। বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকা সাড়ে চার বর্গকিলোমিটার থেকে কমে তিন বর্গকিলোমিটারে নেমেছে। বিপরীতে বাড়ছে পর্যটক। তাঁদের আবাসনের জন্য নতুন হোটেল ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে।


এদিকে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা এবং টেকসই পর্যটন’ শীর্ষক নীতিমালার খসড়ায় দ্বীপটিতে পর্যটক সীমিত করা ও রাতে অবস্থান নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছিল। এ বিষয়ে আপত্তি জানায় পর্যটন মন্ত্রণালয়। নীতিমালাটি এখনো পাস হয়নি।


প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত সেন্ট মার্টিন দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ। এটি কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষে অবস্থিত। আয়তন ৮ বর্গকিলোমিটার। পরিবেশ আইন অনুযায়ী, এটি একটি প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com