‘দেশে ফিরলেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল’
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৪, ২১:৫৫
‘দেশে ফিরলেই মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৭ সালের ৭ মে শত বাধা অতিক্রম করে দেশে ফিরেছিলাম। সে সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, এমনকি আওয়ামী লীগের ভেতর থেকেও দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়। এমনকি দেশে ফিরলে বিমানবন্দরেই আমাকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।


৭ মে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনির্ধারিত এক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটা (৭ মে) আমার জীবনের অনন্য দিন। কারণ আমি সেদিন দেশে ফিরে এসেছিলাম শতবাধা অতিক্রম করে। আমাকে সেই সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক উপদেষ্টাও ফোনে বলেছিল আপনি আসবেন না, আপনি বাইরে থাকেন, যা যা লাগে করবো। আবার কেউ কেউ ধমকও দিয়েছিল। এ কথা বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে ফিরলে ওই এয়ারপোর্টেই মেরে ফেলে দিবে। আমি বলেছিলাম আলহামদুলিল্লাহ, আমি নিজের দেশের মাটিতেই তো কিন্তু আমি আসব।


সরকার প্রধান বলেন, সব এয়ারলাইন্সকে নিষেধ করা হয়েছিল, আমাকে বোডিং পাস যেনো না দেওয়া হয়। আমেরিকায় তিন ঘণ্টা এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে লন্ডন পর্যন্ত আসি। লন্ডনে যেদিন আমি বিমানে উঠতে যাবো, উঠতে দেওয়া হয়নি। সেদিন আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যেভাবেই হোক আমি দেশে ফিরব। এমনকি আমি যখন এয়ারপোর্টে রওনা হই, তখন অনেকে আমাকে ফোনে বলেছে আপনি আসবেন না, আসলে আপনাকে মেরে ফেলে দেবে। আমি পরোয়া করিনি। তবে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও কর্মী ভাইদের প্রতি।


শেখ হাসিনা আরও বলেন, তখন বলা হয়েছিল কেউ যেন এয়ারপোর্ট না যায়। এমনকি আমার দলের ভেতর থেকেও। তখন দলের যিনি সেক্রেটারি ছিলেন তিনি সবাইকে বলে দিয়েছিলেন এয়ারপোর্টে গেলে তাকে বহিষ্কার করা হবে। আমাদের নেতা-কর্মী কেউ রাস্তায় থাকতে পারবে না। আমি শুধু একটাই মেসেজ দিয়েছিলাম সবাই থাকবে। আমরা গেরিলা যুদ্ধ করেছি, সবাই থাকবা, আমার প্লেন না নামা পর্যন্ত, আমি দরজা খুলে না বের হওয়া পর্যন্ত তোমরা বের হবে না।


তিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল, আমি গাড়িতে উঠলে আমাকে একটা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি ড্রাইভারকে বলেছিলাম যেদিকে মানুষ যাচ্ছে সেদিকে যাবা, ফ্লাইওভারের উপরে উঠবা না। হাজার হাজার মানুষ তখন রাস্তায়। আমার দলের কিছু লোকের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে শুধু সংবর্ধনা নয়, আমাকে নিরাপত্তাও দিয়েছে নেতা-কর্মীরা।


তিনি আরও বলেন, সেই সময় কালেভদ্রে দু’একজন আমার কাছে আসতে পারতো। সাবিনা ইয়াসমিন অসুস্থ, আমি গেরিলা কায়দায় বেরিয়ে গিয়ে ছিলাম। পুলিশের চোখ এড়িয়ে আমি হাসপাতালে যাই। সেদিন সেখানে আমি খুব কড়া কথা বলি, আমি বলেছিলাম দেশ চালাচ্ছে কে? পরের দিন সকালে পুলিশ এসে হাজির। আমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে সংসদ ভবনের এক পরিত্যক্ত নোংরা ভবনে। সেখানেই আমাকে বন্দি করে রাখা হয়।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু এই দিন নয়, ৮৩ সালেও এরশাদ সাহেব আমাদেরকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল ৩০ হেয়ার রোডে লাল দালানে। সেখান থেকে ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে। এরশাদ সাহেব আমাকে আরও কয়েকবার গ্রেফতার করে। আমি, মতিয়া আপা, সাহারা আপা (এখন নেই) আমাদের তিনজনকে একসঙ্গে নিয়ে যায় কখনো কন্ট্রোলরুমে সারারাত বসিয়ে রাখে। শুধু তাই নয়, বার বার গ্রেফতার, সরাসরি গুলি, বোমা, গ্রেনেড সবকিছু অতিক্রম করে আজকে এখানে এসে জনগণের সেবা করতে পারছি। এখন আমি শুধু দাঁড়িয়েছি, বাংলাদেশের জনগণকে কৃতজ্ঞা জানাতে, দলের নেতা-কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানাতে।


বিবার্তা/সউদ

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com