যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করছেন। এ অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরই দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত বিদেশ না পাঠালে দায়-দায়িত্ব সব আওয়ামী লীগের- বিএনপি নেতাদের এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, কেন? দায় আওয়ামী লীগের কেন হবে? আপনারা যদি মনে করেন তার উন্নত চিকিৎসা দরকার তাহলে কেন আইনি প্রক্রিয়ায় যাচ্ছেন না? সকাল-বিকাল রাস্তায় বসে নাটক বন্ধ করেন। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আপনারা নাটকবাজি করছেন। যদি বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হয়- তাহলে এর দায়-দায়িত্ব বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বহন করতে হবে, অন্য কারো নয়।
২৬ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এতিমের টাকা আত্মসাৎ মামলায় বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডিত হয়েছেন। তারা বিরুদ্ধে মামলা করেছিল কারা? ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছিল, আওয়ামী লীগ সরকার করেনি। সেই মামলায় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে না পারায় কারাগারে ছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় আজ তিনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিএনপির উচিত ছিল শেখ হাসিনার এই মহানুভবতায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। কিন্তু তারা তা করবে না। কারণ তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। তাদের মাঝে সভ্যতা নেই, গণতন্ত্র নেই।
নির্বাচন সামনে রেখে মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণার কড়া সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, মহাশক্তিধর রাষ্ট্র ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এ ভিসা দেশের কতজনের প্রয়োজন আছে? মানুষ কি এই ভিসানীতির পরোয়া করে? আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বদ্ধ পরিকর। তাহলে কিসের ভিসানীতি। আপনারা (যুক্তরাষ্ট্র) যদি সত্যিকারে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান তাহলে যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চক্রান্ত করছে, নাশকতার হুমকি দিচ্ছে- তাদের বলুন আন্দোলন-আন্দোলন খেলা বাদ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে। তাহলে তো আর ভিসানীতি, স্যাংশনের প্রয়োজন পড়ে না।
তিনি বলেন, যদি ভিসানীতির আড়ালে কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে চান, সেই ষড়যন্ত্র কিভাবে প্রতিহত করতে হয় দেশের মানুষ জানে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, শেখ হাসিনার কর্মী। আমরা একাত্তর সালে নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কোনো হুমকি দিয়ে লাভ হবে না। যদি কেউ ষড়যন্ত্র করতে চান সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে নির্ধারিত সময়ে সংসদ নির্বাচন করে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠন করে আমরা আবারো দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
দেশের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে আছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে অথবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এক মাস পর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে আশা করি। সংসদ নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেয়ার জন্য সারাদেশের মানুষে অধীর আগ্রহে আছে।
শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমদ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ।
বিবার্তা/সোহেল/রোমেল
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]