
বাংলাদেশের অর্থনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে বস্ত্রখাতের ভূমিকা অপরিসীম বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক)। তিনি বলেন, দেশের রফতানি আয়ের সিংহভাগ আসে বস্ত্রখাত থেকে। দ্রুত সম্প্রসারিত এ শিল্প দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে।
৪ ডিসেম্বর, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় বস্ত্র দিবস উদযাপনের বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে বস্ত্রখাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষ সাধন, বস্ত্র শিক্ষার সম্প্রসারণ ও রফতানি বাড়াতে ভূমিকা রাখায় পুরস্কার পাচ্ছে ১০টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
এবারের দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘দেশীয় বস্ত্র ব্যবহার করি, সোনার বাংলা গড়ে তুলি’।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, আজ জাতীয় বস্ত্র দিবস। দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বস্ত্র শিল্পের সম্ভাবনাগুলো বিকশিত করার লক্ষ্যে বস্ত্রখাত সংশ্লিষ্ট সব উদ্যোগ ও অংশীজনদের সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে সরকার ৪ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
গোলাম দস্তগীর গাজী জানান, বর্তমানে বস্ত্রখাতে প্রায় অর্ধকোটি লোক কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই নারী। ফলে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে এখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বস্ত্রখাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, যুগোপযোগী করা ও বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে এ খাতের চাহিদা বাড়াতে ব্যাপক প্রচারের লক্ষ্যে ৪ ডিসেম্বর ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ উদযাপন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, দিবসটি উপলক্ষ্যে আগামী ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বস্ত্র দিবসের মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ওই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এ অনুষ্ঠানে বস্ত্রখাতের উন্নয়ন, উৎকর্ষ সাধন, বস্ত্র শিক্ষার সম্প্রসারণ ও রফতানি বাড়াতে ভূমিকা রাখায় ১০টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হবে।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনায় বস্ত্রখাত দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। বিজিএমইএ ২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যমানের পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার বস্ত্রখাতের অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করে এখাতের উন্নয়নকে গতিশীল রাখার পাশাপাশি বস্ত্র অধিদফতর কর্তৃপক্ষের সব সেবা ওয়ানস্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে দিচ্ছে। বস্ত্র শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশিত করার নিবন্ধিত বস্ত্রশিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের মাধ্যমে কমপ্লায়েন্স পর্যবেক্ষণ ও নিশ্চিত করা হচ্ছে।
বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পে উন্নতমানের সবুজ কারখানার (গ্রিন ফ্যাক্টরি) সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৭১টি। এ ধরনের আরও প্রায় ৫০০টি শিল্প কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি হিসেবে অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন গুলো হলো- বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) , বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ স্পেশালাইজড টেক্সটাইল মিলস অ্যান্ড পাওয়ারলুম ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিএসটিএমপিআইএ), বাংলাদেশ কটন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএ), বাংলাদেশে গার্মেন্ট বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ), বাংলাদেশ টেরিটাওয়েল অ্যান্ড লিনেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিটিএলএমএ), বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স), বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমএই) এবং বাংলাদেশ তাঁতী সমিতি।
এসময় বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ, বস্ত্র অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. নূরুজ্জামানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিবার্তা/রিয়াদ/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]