
গ্যাস সংকট এবং আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির সমাধান হিসেবে বিকল্প জ্বালানি খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি গ্যাস চুরি বন্ধ এবং দেশে গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন তারা।
শনিবার (২ জুলাই) বাংলাদেশ এনার্জি সোসাইটি আয়োজিত ‘স্ট্রাটেজি ফর অপটিমাম ইউটিলাইজেশন অব ন্যাচারাল গ্যাস রিসোর্সেস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা এ পরামর্শ দেন।
মূল প্রবন্ধে বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘গ্যাস যেহেতু ফুরাবেই, আর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ছে; আমাদের বিকল্প উপায় খুঁজতে হবে। আবাসিকে গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে বিদ্যুৎ দেওয়া যেতে পারে। অনেক দেশই বিদ্যুৎ দিয়ে রান্না করে। আমরা গ্যাস দিয়ে সার উৎপাদন করবো, নাকি আমদানি করবো- সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিএনজিতে মাত্র ৫ ভাগ গ্যাস যায়। সিএনজিতে বেশ কিছু সমস্যা আছে; যা অটোগ্যাস (এলপিজি)-এ নেই। সেগুলা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এলপিজির দিকে যেতে পারি।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, ‘সব সময় বিদ্যুতে গুরুত্ব দেওয়া হয়, জ্বালানিতে দেয়া হয় না। এ ক্ষেত্রে বাজেটে বরাদ্দও কম। অথচ সাশ্রয়ী জ্বালানি না হলে তো বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বাড়বে। বাড়বে বিদ্যুতের দাম। এটি সরকারের পরিকল্পনায় থাকা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ যুদ্ধের পরে গ্যাস বা তেলের পরিবর্তে কয়লায় যাচ্ছে। আমাদেরও সামনে অনেক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আসছে। ইতোমধ্যে পায়রা চলে আসছে। রামপাল এ বছরই আসবে। মাতারবাড়িতেও কাজ চলছে। এদিকে ২০২৪ সালের মধ্যে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট আসছে। সুতরাং আমাদের এসব জ্বালানিকে এখন গুরুত্ব দিতে হবে।’
ম. তামিম বলেন, ‘বাসাবাড়িতে এলপিজি সিলিন্ডার আর পাইপলাইনের গ্যাসের দাম সমান করে দেয়া দরকার। গ্রাহকের যেটা ভালো লাগবে সে সেটা ব্যবহার করবে। এই খাতে এত বেশি ভর্তুকি দেয়া উচিত হবে না সরকারের।’
তামিম বলেন, ‘জ্বালানি পরিকল্পনাগুলো ১০ বছর মেয়াদি হওয়া দরকার। এটা আবার ৫ বছর পরপর রিভিউ করতে হবে। এখন যে ২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়েছে, তার কোনো দরকার নেই।’
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘গ্যাসের অনুসন্ধান বাড়ানোর আগে গ্যাস চুরি বন্ধ করতে হবে। বিদ্যুৎ খাত যদি পারে গ্যাসেরও পারা উচিত। বিদ্যুৎ তো লাইন কেটে দেয়। তারা তো অনেক বেশি কঠোর অবস্থানে আছে।’
তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যৎ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এনার্জি প্লানিং অর্গানাইজেশন করা দরকার। পাশাপাশি রিনিউবেল এনার্জি ডিভিশন হওয়া দরকার।’
আরেক বিশেষজ্ঞ সালেক সুফি বলেন, ‘আগামীতে কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র সিম্পল সাইকেলে থাকবে না, সব কম্বাইন্ড সাইকেলে চালাতে হবে। ফলে গ্যাস দিয়ে সব চালানো যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘ঘাটতি মোকাবিলায় ভারত থেকে পাইপলাইনে এলএনজি আনার আলোচনা চলছে। এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং। আনতে পারলে ভালো।’
অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও এসডিজি বিষয়ক সাবেক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন, পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
বিবার্তা/রিয়াদ/বিএম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]