সন্তান-সংসার-কর্মক্ষেত্র একসাথে কীভাবে সামলাবেন কর্মজীবী মা?
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৩, ০৯:৫৪
সন্তান-সংসার-কর্মক্ষেত্র একসাথে কীভাবে সামলাবেন কর্মজীবী মা?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

একটা সময় ছিল যখন বাড়ির পুরুষরা শুধুই বাইরের কাজ করতেন, আর নারীরা শুধুই বাড়ির। কিন্তু বর্তমান চিত্রটা অনেকটাই বদলেছে। জীবনমান উন্নয়নের তাগিদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশীদার হচ্ছেন সংসারের ব্যয় নির্বাহে। 


বর্তমানে নারী-পুরুষ দুইজনই সমান ভাবে ঘরে-বাইরের কাজে অবদান রাখছেন। এতে নারীরা যেমন সাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি পরিবারের সচ্ছলতায়ও হচ্ছেন অংশীদার। মুদ্রার উল্টো পিঠেই আছে সমস্যা, প্রধানত সন্তান লালন-পালনে।


মা মানেই আনন্দের পাশাপাশি সন্তানকে বড় করার এক আকাশ দায়িত্বও। কিন্তু এর সাথে পরিবার এবং কর্মক্ষেত্র কোনটাই বাদ দেয়া যায় না। সবকিছু সামলে নিজের জন্য সময় বের করাটাই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায় মায়েদের জন্য।


কিন্তু সব কিছু একসঙ্গে সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে উঠতে হয় অনেক সময়। তাই সব কিছুর মধ্যে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই মায়েদের পথ অনেকটা মসৃণ হয়।


১) নিজের কাছে অতিরিক্ত প্রত্যাশা নয়


দশ হাতে দশ দিক সামলাবেন, এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও মানে নেই। এতে কিন্তু নিজের চাপ বাড়ে। তাই সব সময় মাকেই সব কিছু করতে হবে না ভেবে সঙ্গীর সাথে সবকিছু শেয়ার করে নিন।


২) নিজের যত্ন ভুলবেন না


পরিবারের সকলের খেয়াল রাখা যেমন আপনার দায়িত্ব, তার মাঝে নিজের যত্ন নেওয়ার কথা কিন্তু কেউ আপনাকে মনে করিয়ে দেবে না। শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে শরীরচর্চা, ত্বকের যত্ন, পর্যাপ্ত ঘুম— এই সবগুলির প্রয়োজন রয়েছে। মায়ের দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি, সারা দিনের মধ্যে ঘণ্টা দুয়েক নিজের জন্য সময় বের করে নিতে হবে আপনাকেই।


৩) নিজের বিকল্প তৈরি করুন


বাড়িতে হোক বা কাজের জায়গায়, আপনাকে ছাড়া কাজ চলবে না এমন পরিস্থিতি তৈরি করবেন না। কর্মক্ষেত্রে কারও সাহায্য চাইতেও কুণ্ঠাবোধ করবেন না। ছোট পরিবারে বাচ্চাকে বড় করে তোলার জন্য তেমন কেউ না-ও থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে শিশুর বাবাকেও ঘরের কিছু কাজে পারদর্শী হতে হবে।


৪) প্রয়োজনে ‘না’বলা শিখুন


মা হওয়া মানেই সব পরিস্থিতির জন্য নিজেকে প্রস্তুত থাকতে হবে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কর্মক্ষেত্রে এবং বাড়িতে, দুই জায়গাতেই ভারসাম্য রেখে চলতে গেলে কিছু বিষয়ে ‘না’ বলতে পারা জরুরি।


৫) নিজের শখ পূরণ করুন


পরিবারের সব দায়িত্ব পালন করার পর, নিজের শখ পূরণ করাটাও জরুরি। অনেক মহিলাই সময়ের অভাবে নাচ, গান, আঁকা, আবৃত্তি, গল্পের বই পড়ার মতো ছোট ছোট শখগুলি বিসর্জন দেন অনায়াসে। কিন্তু মা হিসাবে সব দিক সামাল দিতে গেলে মানসিকভাবে সুস্থ থাকাও জরুরি। তাই মাঝে মাঝেই নিজের শখ পূরণ করুন।


৬) সময় বন্টন


একজন কর্মজীবী মা সবসময় সময় বন্টন নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হন। অফিসের কাজ এবং বাসার কাজ কোনটা কখন এবং কীভাবে করবেন। অবশ্যই একজন শুধু গৃহিনী বা একজন শুধু কর্মজীবী নারী, যার ছোট বাচ্চা নেই তার থেকে একজন কর্মজীবী মায়ের কাজ এবং দায়িত্ব অনেক বেশি। কিন্তু নিজের মতো করে কাজের সময় বণ্টন করে নিন।


৭) অপরাধবোধ


আমরা সবাই জানি সন্তানের জন্য মায়ের সান্নিধ্য এবং যত্ন কতটা গূরুত্বপূর্ণ। একজন কর্মজীবী মা কাজের প্রয়োজনে অনেকটা সময় বাইরে থাকেন, সন্তানকে কম সময় দিতে পারেন। এ কারণে তিনি অনেক সময় অপরাধবোধে ভুগতে পারেন। আর এই অপরাধবোধে ভোগার কারণেই অনেক মা চাকরি ছেড়ে দেন। এটা নিয়ে অপরাধবোধের কিছু নেই, এটা থেকে বেরিয়ে আসুন।


৮) মানসিক দ্বন্দ্ব এবং হতাশা


বাসায় বাচ্চার দেখাশোনা করার জন্য যদি পর্যাপ্ত মানুষ না থাকে মা সব সময় দ্বন্দ্বে ভোগেন। যেমন, চাকরি করবেন নাকি করবেন না, ডে-কেয়ার সেন্টারে দেবেন নাকি দেবেন না; এরকম আরো অনেক। এই দ্বন্দ্ব বেশিরভাগ সময় হতাশায় রূপ নেয়। এটা করা যাবে না। আপনি চাকরি করছেন সন্তানের ভালো জীবনের জন্যই।  


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com