কিডনির যত্ন কেন ও কীভাবে করবেন?
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৩, ১২:০৩
কিডনির যত্ন কেন ও কীভাবে করবেন?
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রিন্ট অ-অ+

দূষিত বা রেচন পদার্থ যদি শরীর থেকে বেরিয়ে না যায়, তা হলে তা জমতে থাকে অভ্যন্তরেই। তাই শরীরকে সার্বিকভাবে সুস্থ রাখার জন্য কিডনি ততটাই গুরুত্বপূর্ণ, যতটা গুরুত্ব রয়েছে অন্যান্য অঙ্গগুলোর।


শরীরে পরিষ্কার রক্তপ্রবাহের পেছনে কিডনির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া কিডনির ইলেক্ট্রোলাইট ও ফ্লুইডের ভারসাম্য বজায় রাখে। তাই কিডনি ভালো রাখতে পারলে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসও ভালো তাকে।


কিডনি রোগ একটি নীরব ঘাতক। নীরবে কারও কিডনি বিকল হতে থাকলেও তেমন কোনো শারীরিক সমস্যা অনুভব করা যায় না। যখন যায়, তখন হয়তো রোগটি জটিল অবস্থায় চলে গেছে। তাই যেকোনো সুস্থ মানুষকেও জানতে হবে কিডনি ভালো রাখার উপায়,


** নিয়মিত শরীরচর্চা:


প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হলেও ব্যায়াম করুন। এছাড়া হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো এমনকি নাচও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। এগুলো আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও হার্ট ভালো রাখে। এছাড়া এটি দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের ঝুঁকি কমায়।


** রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখুন:


১২০/৮০ হলো শরীরের স্বাভাবিক রক্তচাপ। তবে এটি ১৪০/৯০ এর উপরে থাকলে তা কিডনির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও কাঁচা লবণ কম খাওয়ার অভ্যাস করুন।


** ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখুন:


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে কিডনির রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই নিয়মিত রক্তে সুগারের পরিমাণ পরীক্ষা করাতে হবে। সুগার বেশি থাকলে মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।


** সবধরনের মাদককে না বলুন:


ধূমপান ও মদপানের কারণে ধীরে ধীরে কিডনিতে রক্ত চলাচল কমে যেতে থাকে। ফলে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাই ধূমপান, মদপান ও সবধরনের মাদকের অভ্যাস পরিহার করতে হবে।


** নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করান:


উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত ওজন অথবা পরিবারের কারো কিডনির সমস্যা থাকলে কিডনি রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই আপনার যদি এগুলোর কোনো একটিও থাকে তাহলে নিয়মিত কিডনির পরীক্ষা করান।


** চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ বাঞ্ছনীয়


১। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন না করাই ভালো। বিশেষত ব্যথানাশক সেবন করা একেবারেই উচিত নয়।


২। ৪০ বছর বয়স পেরোনোর পর কোনো সমস্যা না থাকলেও সবারই বছরে একবার রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তের চর্বি এবং প্রস্রাবের রুটিন পরীক্ষা করানো উচিত (প্রস্রাবে প্রোটিন এবং সুগারের উপস্থিতি নির্ণয় করার জন্য)। এ ছাড়া কিডনির কর্মক্ষমতা দেখার জন্য রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের ৩২ শতাংশ জানেনই না যে তিনি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। আবার জানা থাকার পরও অর্ধেক মানুষেরই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই। শেষ পর্যন্ত মোট রোগীর মাত্র ২৫ শতাংশ পারছেন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে। একই ধরনের কথা ডায়াবেটিসের জন্যও প্রযোজ্য। প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ জানেনই না তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কিন্তু এই রোগগুলো থাকার কারণে রোগীর কিডনি ধীরে ধীরে কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে নীরবে।


৩। ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়ে থাকলে কিংবা রক্তের চর্বি বেড়ে থাকলে অবশ্যই তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কিডনি বিকলের প্রধান কারণ এগুলোই।


৪। কিডনির রোগের লক্ষণগুলোকে জানুন। ক্ষুধামান্দ্য, বমিভাব, প্রস্রাব কম হওয়া, পায়ে পানি আসা প্রভৃতি হতে পারে কিডনি রোগের লক্ষণ। লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসা নিন।


৫। যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগের ক্ষেত্রে করণীয়-বর্জনীয় বিষয়গুলো এবং রোগের জটিলতার লক্ষণ সম্পর্কে চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন। রোগীর পরিবার কিংবা রোগীর সেবা দেন যিনি, তাঁদেরও বিষয়গুলো জানতে হবে।


বিবার্তা/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com