
রোজ রোজ বাজারে যাওয়ার ঝক্কি থাকবে না। ফ্রিজে খাবার রাখলে দীর্ঘ দিন তা ভাল থাকে— এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এ ছাড়াও ছুটির দিনে অনেকেই রান্না করে ফ্রিজে তুলে রাখেন। যাতে অফিস যাওয়ার আগে প্রতি দিন খাবার রান্না করতে না হয়। তবে কিছু কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলি ফ্রিজে রাখলে খাবারের গুণমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই তালিকায় কোনগুলি রয়েছে?
তেল
নারকেল তেল, অলিভ অয়েল কোনও ধরনের তেলই ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। ফ্রিজের আবহাওয়ার সংস্পর্শে এসে তেলের মধ্যে থাকা স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলি নষ্ট করে দেয়। এ ছাড়া ফ্রিজের ঠান্ডায় তেলও জমে যায়। ফলে রান্নার সময়ে তা ব্যবহার করতে সমস্যা হতে পারে। তাই এই ধরনের তেল হেঁশেলেই ঘরের তাপমাত্রায় রাখুন।
রান্না করা মুরগির মাংস
রাতে রুটির সঙ্গে ঝাল ঝাল কষা মুরগির মাংস রেঁধেছিলেন। কিন্তু পুরোটা খেতে পারেননি। ফলে খানিকটা বেঁচে গিয়েছে। সেটা একটি পাত্রে করে ফ্রিজে তুলে রাখলেন। এই অভ্যাস একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। রান্না করা মাংস ফ্রিজে তুলে রাখলে স্বাদ তো বটেই, মাংসের স্বাস্থ্যগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি, অনেক দিন ধরে ফ্রিজে রাখা মাংস খেলে পেটের গোলমালও দেখা দিতে পারে।
কলা
ফল অনেক দিন ভাল রাখতে অনেকেই ফ্রিজে রাখেন। অন্য ফল ফ্রিজে রাখলেও কলা কখনও রাখবেন না। ঠান্ডা কলা শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়। সব সময়ে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে। ঘরের তাপমাত্রায় কলা কাঁচা থাকলেও তা পেকে যাবে। কোনও ক্ষয় হবে না।
পাউরুটি
অনেকেরই সকালের খাবারে পাউরুটি থাকে। বেশি দিন পাউরুটি ভাল রাখতে অনেকেই তা ফ্রিজে রেখে দেন। এতে পাউরুটি আরও বেশি করে শুকিয়ে যায়। এর গুণমানও চলে যায়। তাই পাউরুটি ফ্রিজে না রাখাই ভাল।
মধু
দীর্ঘ দিন মধু সংরক্ষণ করতে অনেকেই তা ফ্রিজে রেখে দেন। মধুর স্বাদ ও গুণাগুণ এর ফলে নষ্ট হতে থাকে। তাই ফ্রিজে না রেখে বরং একটি অন্ধকার কোনও জায়গায় রাখতে পারেন। মধু অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকবে।
অলিভ অয়েল
ফ্রিজে তেল জাতীয় জিনিস রাখা একে বারেই উচিত নয়। তার উপর তেল যদি হয় জলপাইয়ের তাহলে তো একেবারেই নয়। ফ্রিজে অলিভ অয়েল রাখলে তা ঘোলাটে এবং দানাযুক্ত এবং ঘন হয়ে যায়। অলিভ অয়েল স্বাভাবিক উষ্ণতাতেই রাখা উচিত।
পিঠে বা মিষ্টি বা কেক
পিঠে, মিষ্টি, কেক, কুকিজ ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় তার স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। সেকারণে এগুলো খোলা না রেখে এয়ারটাইট বাক্সে রাখা উচিত।
শাকপাতা
তুলসি, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, পালং শাক, পুঁইশাক ইত্যাদি ফ্রিজে না রাখাই উচিত। ফ্রিজে এগুলো টাটকা থাকলে বাইরে নিয়ে আসা মাত্র তা শুকিয়ে স্বাদহীন হযে যায়।
ড্রাই ফ্রুটস্
শুকনো ফল বা ড্রাই ফ্রুটস্ কখনওই ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এতে শুকনো ফলগুলো নরম হয়ে স্বাদ হারিয়ে ফেলে।
গুঁড়া মশলা
শুকনা গুঁড়া মশলা ফ্রিজে রাখলে দ্রুত নষ্ট হয়। এর মেয়াদ অক্ষুন্ন রাখতে অন্ধকার এবং শুষ্ক স্থানে রাখা উচিত। তাপমাত্রা হবে স্বাভাবিক।
টমেটো
টমেটো ফ্রিজে রাখাও অনুচিত। বেশিদিন টমেটো রাখলে তা নরম হয়ে যায়। তার থেকে রস বেরিয়ে যায়। ফলে টমেটোর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। পানিতে ধুয়ে শুকানোর পর বাতাস চলাচল করে এমন জায়গাতেই টমেটো রাখা উচিত।
টমেটো সস বা কেচাপ
টমেটোর মতো টোম্যাটো সস বা কেচাপেও ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। সস বা কেচাপে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিনিগার, লবণ এবং চিনি। সেগুলো ফ্রিজে রাখার পরিবর্তে ঘরের তাপমাত্রায় রাখাই ভালো।
বাদাম
খোলাভাবে ফ্রিজে বাদাম রাখলে তা একেবারে নরম হয়ে যাবে। তাই ফ্রিজে বাদাম রাখাটা বোকামি। তবে বেশিদিন ধরে বাদাম সংরক্ষণ করতে চাইলে এয়ারটাইট কৌটোয় বাদাম ভরে রাখা যায়। বহুদিন পর্যন্ত বাদাম ঠিক থাকবে।
সবকিছু যে ফ্রিজে রাখলেই ভালো থাকে, তেমন কিন্তু নয়। কিছু খাবার আছে, যেগুলো ফ্রিজে রাখলেই বরং নষ্ট হয়ে যায়। বেশি শীতল তাপমাত্রায় এই খাবারগুলোর স্বাদ এবং গুণাগুণ ভালো থাকে না। তাই খাবারের ধরন বুঝে তা সংরক্ষণ করা উচিত।
বিবার্তা/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]