
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোর জন্য দায়ী পাক সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিচার চেয়েছে ভারত। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এই দাবি জানিয়েছেন জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধি টিএস ত্রিমূর্তি। দ্য ইকোনমিক টাইমস।
২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক। এবারের বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হলো ‘সশস্ত্র সংঘাতকালে সাধারণ বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা: বড় শহরসমূহে যুদ্ধ ও নগরাঞ্চলে বসবাসরত বেসামরিক মানুষের সুরক্ষা’।
বৈঠকে টিএস ত্রিমূর্তি বলেন, ‘আমরা দেখছি, যুদ্ধ ও সন্ত্রাসী হামলার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহর কী পরিমাণ বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের দফতর থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও নগরাঞ্চলে সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। গত কয়েক বছর ধরে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সন্ত্রাসী হামলার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া ও ইয়েমেনের শহরসমূহে বসবাসকারী লোকজন। অনেক ক্ষেত্রেই সংঘাতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিস্ফোরক অস্ত্র, যার ফলে ঢালাওভাবে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।’
‘কিন্তু এখনও অনেক দেশ আছে, যারা নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া গণহত্যার জন্য ন্যায়বিচার পায়নি। বাংলাদেশ সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালে সাবেক পূর্বপাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশের নগরাঞ্চলে ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। ভারত মনে করে, এই গণহত্যার ন্যায়বিচার হওয়া উচিত।’
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার সাধারণ বেসামরিক মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে ওই রাতে ঢাকায় হত্যা করা হয়েছিল অন্তত ৬ হাজার মানুষকে।
‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই বেতারে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এবং সেই রাতে তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
২৫ মার্চের পর বাংলাদেশের মুক্তিকামী তরুণ প্রজন্মের একাংশ ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ শুরু করেন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে ভারতের সেনাবাহিনীও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। ৯ মাসব্যাপী স্থায়ী এই যুদ্ধে নিহত হয়েছেন অন্তত ৩০ লাখ মানুষ।
গত তিন-চার দশকে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যায় যুক্ত পাকিস্তানি সেনা সদস্যদের বিচার চেয়ে কয়েকবার আবেদন করেছে বাংলাদেশ, কিন্তু পাকিস্তানের অসহযোগিতার কারণে সেসব উদ্যোগ সফল হয়নি।
বিবার্তা/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]