
বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশের কৃষি শিক্ষা ও গবেষণার সূতিকাগার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৬৪ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়েছে। ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট ময়মনসিংহের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ১২০০ একর ভূমির ওপর যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের কৃষিক্ষেত্রে শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রমে অনন্য অবদান রেখে চলেছে।
১৮ আগস্ট, রবিবার সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকৃবি শিক্ষক সমিতির আয়োজনে লাইব্রেরি ভবনের সামনে থেকে একটি র্যালির মাধ্যমে দিবসটি পালনের কার্যক্রম শুরু হয়। র্যালির উদ্বোধন করেন বাকৃবির ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন হয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দিয়ে গিয়ে হ্যালিপ্যাডে এসে শেষ হয়। এ সময় দোয়া এবং জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
পরে সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার। পরে হ্যালিপ্যাড এবং মরণ সাগর স্মৃতিস্তম্ভের মাঝখানে বৃক্ষরোপন করা হয়। এরপর ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা।
বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার সঞ্চালনায় র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সোনালী দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. হারুন-অর-রশিদ এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান, পশুপালন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, জিটিআইয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. বেনতুল মাওয়াসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের রোগমুক্তি কামনা করে অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয় চাই, যা হবে বিশ্বমানের এবং ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়ে প্রথম ধাপে থাকবে। আর তা করতে হলে আমাদের ক্যাম্পাসকে রাজনীতিমুক্ত করতে হবে। আমাদের প্রাণশক্তি হচ্ছে ছাত্র সমাজ। তারা নিজ নিজ সেক্টরে পড়াশোনা করবে,ভালো গবেষণা করবে, ভালো আর্টিকেল প্রকাশ করবে এবং দেশকে কৃষি উন্নয়নে স্বয়ংসম্পূর্ণ করবে। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সক্ষমতা আছে। কিন্তু বর্তমানে নোংরা রাজনীতির কারণে সে সুযোগ পাচ্ছে না। আমি মনে করি এই ধরনের নোংরা রাজনীতি থেকে আমাদের ছাত্র সমাজ ভবিষ্যতে মুক্ত হবে।
বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কৃষি উন্নয়নে অভূতপূর্ণ অবদান রেখে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের অবদানে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। কিন্তু এখন আমরা তা ধরে রাখতে পারছি না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন অনেক বেশি, তাই দায়িত্বও বেশি। আমরা চাই ক্যাম্পাসকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে। এখানে কোন নোংরা রাজনীতি থাকবে না। শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করবে, আমরা শিক্ষা দান করবো এইটা হবে আমাদের রাজনীতি। বাকৃবি হবে একটা মডেল বিশ্ববিদ্যালয়, এখানে সবাই সুন্দরভাবে লেখাপড়া করবে এবং দেশে বিদেশে অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠান শেষে দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদ ও উপাসনালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়।
বিবার্তা/আমানউল্লাহ/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]