
নিখোঁজের ১২ বছর পর মো. সুমন মিয়া (৩০) নামে এক যুবককে উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মঙ্গলবার (২৪ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০১০ সালের ৩১ আগস্ট কাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন ১৭ বছরের কিশোর সুমন। পথে জুয়াড়িদের পাল্লায় পরে হারেন ১০০ টাকা। কিন্তু তার সাথে টাকা না থাকায় নিজের উপার্জনে কেনা মোবাইল ফোন দিয়ে দিতে হয় সেই জুয়াড়িদের। ভয়ে আর ক্ষোভে বাসায় ফেরার সাহস পাননি সেই যুবক। নিখোঁজের পর প্রথমে জিডি তারপর অপহরণ মামলা করেন তার বাবা।
অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর তত্ত্বাবাধনে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের (বিপিএম-সেবা) নিবিড় তদারকিতে ২৩ মে ভিকটিমকে উদ্ধার সংক্রান্তে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়ায় পুলিশ পরিদর্শক মোহাম তরিকুল ইসলাম আদালতে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে পুনরায় মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্তকারী অফিসারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম সুমনকে ২৩ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকার কদমতলী থানাধীন মদিনাবাগ এলাকা হতে উদ্ধার করা হয়।
ভিকটিম সুমনকে (৩০) জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, তিনি শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, মিরপুরে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি ডায়মন্ড প্যাকেজিংয়ে হেলপার হিসাবে কাজ করেন। ঘটনার দিন মিরপুর-১১ সুন্দর বাজার এলাকার চার রাস্তার মোড়ে ৩ তাসের জুয়া খেলায় ১০০ টাকা ধরে হেরে যান। তার কাছে টাকা না থাকায় জোর করে মোবাইল ফোন জুয়াড়িরা রেখে দেয়। মোবাইলের বিষয়ে বাবার কাছে কী জবাব দেবেন এই ভয়ে মিরপুর থেকে গুলিস্তনে চলে যান। সারাদিন গুলিস্তানের ঘোরাফেরা করেন। রাতেও বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন। পরদিন সকালে বায়তুল মোকাররম মসজিদে শুয়ে থাকেন।
সেখান থেকে এক লোক তাকে শাহবাগ ফুল মার্কেটে নিয়ে নাস্তা খাওয়ান। পরবর্তীতে টিপু নামে এক লোক তাকে শাহবাগ এলাকার একটি হোটেলে শুধু থাকা ও খাওয়ার শর্তে কাজ দেন। ওই হোটেলের বাবুর্চি হারুনের সাথে তার বন্ধুত্ব হয় এবং তার সাথে সুমন ভোলার লালমোহন উপজেলার মঙ্গল শিকদার এলাকায় একাধিকবার যান। এরপর শাহবাগ এলাকায় বিভিন্ন চটপটির দোকানে কাজ, পপকর্ন বিক্রি, বাসের হেলপার, রুমা অ্যাকুরিয়াম সেন্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন। এরই মধ্যে নানু ওস্তাদ নামে এক ড্রাইভারের সাথে তার পরিচয় হয়। তার সঙ্গে হেলপারি করেন। ইউলফ টেকনিক্যাল স্কুল ও বারডেম হাসপাতালের যাত্রী আনা নেয়া করতেন। এরমধ্যে ইউসুফ স্কুলের জোনাকী নামের একটি মেয়ের সাথে তার ভালো সম্পর্ক ছিল। সেই সুবাদে তাদের বাসায় যেতেন। এক পর্যায়ে জোনাকীর মা জোসনার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। জোসনার স্বামী বকুল মোল্লা তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিলে ভিকটিম সুমন প্রায় ৩ বছর আগে লালবাগ কাজী অফিসে জোসনাকে বিয়ে করেন। এর মধ্যে তার একটি ছেলে হয়, নাম-হাবিবুল্লাহ (৩ মাস)।
উদ্ধারের আগ পর্যন্ত ভিকটিম সুমন তার স্ত্রী জোসনার সাথে রায়েরবাগ এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন।
বিবার্তা/তাওহিদ/কেআর
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
পদ্মা লাইফ টাওয়ার (লেভেল -১১)
১১৫, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ,
বাংলামোটর, ঢাকা- ১০০০
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]