ভাইকে হত্যার অভিযোগে ট্রান্সকমের সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে মামলা
প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৪, ২১:১৪
ভাইকে হত্যার অভিযোগে ট্রান্সকমের সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে মামলা
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নিজের ভাইকে হত্যার অভিযোগে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তারই ছোট বোন শাযরেহ হক।


শুক্রবার (২২ মার্চ) গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তিনি। এ মামলায় আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।


২৩ মার্চ, শনিবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার রিফাত রহমান শামীম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে মামলার অভিযোগে বলেছেন, তাঁর বড় বোন সিমিন রহমানসহ আসামিরা তাঁর বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে বিষ প্রয়োগ/শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন।


মামলার অপর আসামিরা হলেন, সিমিন রহমানের ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপক ডা. মুরাদ এবং পরিচালক (বিপণন ও বিক্রয়) ডা. মো. মুজাহিদুল ইসলাম, ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক (অর্থ) কামরুল হাসান, আইন কর্মকর্তা মো. ফখরুজ্জামান ভুঁইয়া, ব্যবস্থাপক (করপোরেট অ্যাফেয়ার্স) কেএইচ মো. শাহাদত হোসেন, কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ও সেলিনা সুলতানা এবং গ্রুপের কর্মচারী রফিক ও মিরাজুল।


মামলার এজাহারে শাযরেহ হক বলেন, মুসলিম শরিয়া আইন অনুযায়ী তিনিসহ তাঁর মৃত বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমান (৫৭) এবং মামলার এক নম্বর আসামি সিমিন রহমান তাঁর পিতার সকল স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ। লতিফুর রহমানের স্থাবর সম্পত্তিসহ তাঁর প্রতিষ্ঠা করা ট্রান্সকম গ্রুপের শেয়ার এবং পজিশন নিজেদের অনুকূলে হস্তগত করাসহ তাঁকে (শাযরেহ) এবং তাঁর বড় ভাইকে (আরশাদ) সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অসৎ উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করেন সিমিন রহমান ও তাঁর ছেলে যারাইফ আয়াত হোসেন।


তাঁদের জাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত বছরের ৮ জুন আরশাদ ওয়ালিউর রহমান পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি প্রদান করেন। এতে সিমিন রহমান আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের ওপর ক্ষিপ্ত হন। তখন তিনি জীবনের নিরাপত্তার আশঙ্কা প্রকাশ করেন। এর ৮ দিন পর ১৬ জুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আরশাদ। আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলশান-২ এর নিজের বাসার শয়ন কক্ষে মৃত ও চিৎ অবস্থায় দেখতে পান। যদিও তাঁর শরীরে কোনো জটিলতা রোগ ছিল না।


মামলার এজাহারে শাযরেহ হক আরও বলেন, ঘটনাস্থলে সকল আসামিকে তিনি দেখতে পান। কিন্তু তাঁর মারা যাওয়ার কথা বা অসুস্থতার কথা কেউই জানাননি। পরে দ্রুত তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে মৃত্যুর সনদপত্র নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করেন এবং সেদিন বিকেলেই দাফন করেন।


শাযরেহ হক মামলায় উল্লেখ করেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকেরা সিমিন রহমানের উদ্দেশ্যে বলেছেন, উনি অনেক আগেই মারা গেছেন। কেন তাঁকে এত পরে হাসপাতালে আনা হলো? তখন পারিবারিক চিকিৎসক ডা. মুরাদ হাসপাতাল প্রশাসনকে বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ রিপোর্ট করার প্রয়োজন নেই।


শাযরেহ হক আরও উল্লেখ করেছেন, তিনি মনে করেন ১১ জন আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে তাঁদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে তাঁর বড় ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে বিষ প্রয়োগ বা শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে, যা আসামিদের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে।


উল্লেখ্য, আরশাদ ওয়ালিউর রহমান গত বছরের ১৬ জুন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান। তিনি ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। আরশাদ ওয়ালিউর ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের বড় সন্তান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।


বিবার্তা/এমজে

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com