
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের ২৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
২৭ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর টিকাটুলিতে র্যাব-৩ এর সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাং সদস্যরা হলো- মো. রাব্বি (২০), মো. হৃদয় (২০), মো. মুন্না (২০), মো. হাসান (২০), আব্দুর রশিদ এসহাক ওরফে রকি (২৬), মো. শুভ (২০), মো. সিফাত (১৮), মো. রাকিব (১৮), মো. তন্ময় হোসেন (১৮), মো. মিলন (১৯), মো. রাজন (১৯), মো. ইয়াছিন (১৯), মো. ইমন (১৮), আবু তাওহীদ সাফির (২০), মো. সিয়াম (১৯), মো. রাকিবুল ইসলাম (২০), মো. জাকির হোসেন (৩০), মো. রাকিব (২৩), মো. নাফিস হোসেন মুন্না (২৪), মো. শুভ (২২), মো. রবিউল শেখ (২৪), মো. মোশারফ (২৫), মো. সোহেল (২৭), মো. শুভ (২৭), মো. বাবুল খান (৩৬), মো. নজরুল হক (৩২) ও মো. বাবুল হোসেন (৩৬)।
অধিনায়ক আরও বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত র্যাব-৩ এর পৃথক পৃথক আভিযানিক দল কিশোর গ্যাং রাব্বি গ্রুপের ৫ জন, হৃদয় গ্রুপের ৭ জন, মুন্না গ্রুপের ৩ জন, হাসান গ্রুপের ২ জন, এবং রকি গ্রুপের ১০ জনসহ সর্বমোট ২৭ জন সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় প্রতিটি কিশোর গ্যাং গ্রুপে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য থাকে। রাব্বি গ্রুপটি সন্ত্রাসী মো. রাব্বির নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। নিজেদের মধ্যে আন্তঃকোন্দলের কারণে তারা ২ থেকে ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়। হৃদয় গ্রুপটি গ্রেফতারকৃত হৃদয়ের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন যাবত পরিচালিত হয়ে আসছে। গ্রেফতারকৃতরা রাজধানীর বংশাল ও আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এই গ্রুপের সন্ত্রাসীরা পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এছাড়াও শাহজাহানপুর ও সবুজবাগ এলাকায় মুন্না এবং হাসান গ্রুপ দীর্ঘদিন যাবত সন্ত্রাসী মো. মুন্না এবং হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়ে আসছে। এরা রাজধানীর শাহাজাহানপুর, সবুজবাগ, খিলগাঁও এবং এর আশপাশের এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ইভটিজিং,মারামারিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। সাইলেন্সারবিহীন মোটরসাইকেল নিয়ে বিকট শব্দ করে খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে অপরাধ মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
গ্রেফতারকৃত গ্রুপের মধ্যে রকি গ্রুপটি রাজধানীর শ্যামপুর কদমতলী, যাত্রাবাড়িসহ আশপাশের এলাকায় আসামি রকির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। তারা এসব এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন মানুষকে হুমকি, মারধরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রম করে থাকে। তাদের মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করা। এছাড়াও তারা রকির নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় টাকার বিনিময়ে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পেশায় গাড়ির হেলপার, ড্রাইভার, গ্যারেজ মিস্ত্রি, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা হলেও মূল পেশার আড়ালে তারা মূলত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল।
এসব কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কাদের নেতৃত্ব এমন কার্যক্রম করে এবং তাদের বিরুদ্ধে আপনারা কি পদক্ষেপ নিচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এলাকার প্রভাবশালীদের মদদে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা রাজত্ব করেন। আমরা তাদের তথ্য পেয়েছি, ধরতে গোয়েন্দা টিম কাজ করছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিবার্তা/জবা
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]