শিরোনাম
‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দিন’
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:১১
‘আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দিন’
বিবার্তা প্রতিবেদক
প্রিন্ট অ-অ+

নিখোঁজ মিরপুরের কাঠ ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বাতেনের (৬০) সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ইনশা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, আমার আব্বুকে ফিরিয়ে দিন। আমরা আর পারছি না।আমার লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে।আমার ৪ বছরের ছোট ভাই ইনাম শুধু আব্বু আব্বু করে ডাকে। মানসিক ভাবে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।


শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত মানববন্ধনে ইশনা এ কথা বলেন।


ইশনা বলেন, আমার মা আগের মত কথা বলেন না। ঠিকমত রান্নাও করেন না। আমাদের ভবিষ্যত অন্ধকার। এখান থেকে প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ গ্রহণ করলেই বাবাকে ফেরত পেতে পারি।


ঢাকা এ্যাডভেন্টিস্ট প্রিসেমিনারী এন্ড স্কুল (ড্যাপস) এ পড়ুয়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ইনশা।


ইশনার মা নাসরীন জাহান স্মৃতি বলেন, আর কার কাছে বিচার চাইবো। কি অপরাধ করেছে আমার স্বামী। সে কখনো রাজনীতি করেনি। একজন সাধারণ কাঠ ব্যবসায়ী হিসেবে মিরপুরে ছোট পরিবার নিয়ে বেশ সুখে শান্তিতেই চলে যাচ্ছিল। হঠাৎ এক কাল বৈশাখী ঝড়ে সবকিছু তছনছ হয়ে গেল। এখন চোখে মুখে কিছুই দেখছি না। শিশু দুটি সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। যে যা বলছে সেখানেই ছুটছি। যদি স্বামীর সন্ধান পাই। কিন্তু কোথাও পাইনি। তাই আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।


মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা।


তিনি বলেন, শিশু ইনশা-ইনামের মত অনেক শিশুরা তাদের পিতাকে হারিয়ে এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তাদের অনেকের লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে গেছে। ক’দিন আগে কুষ্টিয়ার আবরারের বাসায় তার মা-বাবাকে দেখতে গিয়ে পাশেই কুষ্টিয়ার গুম হওয়া সাজ্জাদ হোসেন সবুজের বাসায় গিয়েছিলাম। তার একমাত্র মেয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। অথচ তার সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার কথা ছিল। ৫ বছর আগে গুম হয়ে যাওয়ায় তার পড়ালেখার পাশাপাশি মানসিকভাবে রোগীতে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলেই বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করে দিয়ে যারা গুম হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।


এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন আফরোজা ইসলাম আঁখি, গুম হওয়া ড্রাইভার কাউসারের স্ত্রী ও শিশু কন্যা লামিয়া মিম ও পরিবারের পক্ষ থেকে জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যান্যরা।


লিখিত বক্তব্যে গুম হওয়া ইসমাইল হোসেন বাতেনের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী ইসমাইল হোসেন বাতেন (৬০) ১৯ জুন সকাল ৯টায় বাসা থেকে বের হয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যায়। দুপুর ২৭টা ৩০ মিনিটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে দুপুরের খাবারের কথা বলে বের হন। কিন্তু তিনি বাসায় ফিরে আসেনি। তারপর দিনরাত বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে না পাওয়ায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল বন্ধ থাকায় পরের দিন ২০ জুন শাহআলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। যার নং- ৮৩০। উক্ত জিডি করার পর থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত আমি ও আমাদের আত্মীয় স্বজন মিলে বহু খোঁজাখুঁজি করেছি কোথাও পাইনি। ইতিপূর্বে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধনসহ সাংবাদিক সম্মেলন করেছি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি।


বিবার্তা/জাই

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com