গাবতলী বাস টার্মিনালে বেড়ে ওঠে নাহিদ। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মাকে হারিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সে। ঠিকানা-পরিচয় না থাকায় পথশিশু হিসেবেই পরিচিত হয়ে ওঠে সাত বছরের নাহিদ।
গত ৩০ জুলাই প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হয় নাহিদ। গাবতলী বাস টার্মিনালের অন্যান্য পথশিশু ও একজন পরিবহন শ্রমিকের নজরে পড়লে তারা চিকিৎসার জন্য নাহিদকে হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রথমে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত এ পথশিশুর খবর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এগিয়ে আসেন শাহীন নামে মিরপুরের এক বাসিন্দা।
নাহিদের চিকিৎসার কথা বিবেচনা করে তাকে বেসরকারি হাসপাতাল আল-হেলালে ভর্তি করেন শাহীন। পরিবার-পরিচয়হীন শিশুটির চিকিৎসা নিশ্চিতে এগিয়ে আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। বিনা পয়সায় প্রায় ৩ সপ্তাহ চিকিৎসা দেয়ার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হয় নাহিদ।
ইতোমধ্যে নাহিদকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে গণমাধ্যম। তা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষের মুখে নাহিদকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদের কথা শুনতে পেরে নাহিদের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানার শরালকী এলাকা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন নাহিদের নানী।
ঢাকায় পৌঁছানোর পর হাসপাতালের নাম-ঠিকানা না জানার কারণে পথে পথে ঘুরতে হয় তাকে। অবশেষে হাসপাতালের ঠিকানা পেয়ে ছুটে যান এবং দেখা পান আদরের নাতি নাহিদের।
নাহিদ তার হারানো স্বজনকে (নানী) খুঁজে পাওয়ায় তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরে ‘পাথওয়ে’ নামক বেসরকারি একটি উন্নয়নমূলক সংস্থা এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে পটুয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মুহিববের উপস্থিতিতে পথশিশু নাহিদকে তার খুঁজে পাওয়া স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহম্মেদ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, আল-হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবুদ্দিন খাঁন, চিত্রনায়ক সায়মন সাদিক ও পাথওয়ের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শাহিন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নাহিদের মতো পথ শিশুদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে সবার প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
বিবার্তা/রবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]