শিরোনাম
টুং-টাং শব্দে মুখরিত মাগুরার কামার পাড়া
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০১৯, ১৪:৪৩
টুং-টাং শব্দে মুখরিত মাগুরার কামার পাড়া
শ্রাবণ আহমেদ
প্রিন্ট অ-অ+

কামারবাড়ি দিন-রাত টুং-টাং শব্দের মুখরিত হচ্ছে। সামনে ঈদুল আজহা তাই এই ব্যস্ত সময় পার করছে কামার শিল্পীরা। হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীন কামার শিল্প যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এখন দম ফেলারও ফুরসত নেই কামার পাড়ার শিল্পীদের। দিন-রাত সমান তালে লোহার টুং-টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে মাগুরার কামার পাড়া।


কেউ আসছে নতুন দা, ছুরি, বটি, চাপাতি কিনতে। আবার কেউ আসছে বাড়িতে থাকা পুরনো গুলোকে ধার দিতে। তাই এই সময় টা ব্যস্ত সময় পার করছে মাগুরার কামাররা।


শহর-গ্রাম সবখানেই কামাররা সমান ব্যস্ত পুরনো দা, ছুরি এবং বঁটিতে ধার দিতে। কেউবা ব্যস্ত নতুন নতুন দা-ছুরি তৈরিতে। তাই দম ফেলার যেন সময় নেই কামারদের। বছরের অন্য সময়টা কাজ কম থাকলেও কোরবানির এই সময়টা ব্যস্ততা বেশি তাদের। আর যারা কোরবানি দিবেন তারা ছুটছে কামারের কাছে। কেউ পুরানোটা ধার করাতে। কেউবা নতুনটা কিনতে।


কথা হয় ছুরি কিনতে আসা মাগুরা সদর উপজেলার ছোনপুর গ্রামের ইয়াকুব মোল্যার সাথে। তিনি বলেন, এবার ঈদে একটা ছাগল কোরবানি দেবো। সেজন্য বাড়িতে থাকা চাপাতি ছুরি ধার করাতে এসেছি।


দা, ছুরি, বটি, চাপাতি বিক্রেতা মিলটন হোসেন কামার বলেন, কোরবানির ঈদে অনেকেই পশু কোরবানি দেয়। কেউ কোষাই ঠিক করে। আবার অনেকে নিজেরাই করে। আর সবার বাড়িতে এগুলো না থকায় আমরা তৈরি করা দা, ছুরি, বটি, চাপাতি বিক্রি করি। তার বিক্রি করা চাপাতিগুলো বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০টাকা। আর চামড়া ছাড়ানো ছুরি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০টাকা। বেচা বিক্রি ভালই হচ্ছে তার।


চামড়া ছাড়ানো ছুরি কিনতে আসেন আড়–য়াকান্দিন গ্রামের রফিকুল ইসলাম । তিনি বলেন, এবার একটা গরু কোরবানি দেব। বাড়িতে সব কিছু ছিলো কেবল একটা ছুরি লাগবে। তাই এখানে এসেছি। তিনি একটা ছুরি কিনব ১০০ টাকা দিয়ে।


সদরের কাটাখাল বাজারে ৪০ বছর ধরে কাজ করা বাবু কামার জানান, বছরের অন্য মাসগুলোতে তাদের ব্যবসা হয় এক রকম আর কোরবানির ঈদের আগের এক মাসে ব্যবসা হয় আরেক রকম। এ সময় বেচা বিক্রি ও লোকজনের মরিচা পড়া দা, বঁটি, ছুরি ইত্যাদি সরঞ্জাম ধারালো করার ব্যস্ততা বেড়ে যায়। তাইতো আমাদের দোকানে মৌসুমি কর্মচারীর সংখ্যাও বাড়াতে হয়।


আরেক বিক্রেতা কাটাখাল বাজারে ৪৫ বছর ধরে কাজ করা নুর ইসলাম কামর এর সাথে কথা বলে জানা যায়, স্প্রিং লোহা ও কাঁচা লোহা সাধারণত এ দুই ধরনের লোহা ব্যবহার করে এসব উপকরণ তৈরি করা হয়। স্প্রিং লোহা দিয়ে তৈরি উপকরণের মান ভালো, দামও বেশি। আর কাঁচা লোহার তৈরির উপকরণ গুলোর দাম তুলনা মূলকভাবে কম। এসব লোহা সাধারণত কেজি দরে বিক্রি হয়।


তিনি বলেন, লোহার মানভেদে স্প্রিং লোহার কেজি ৭০০ টাকা, রেল পাতির লোহা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এছাড়া পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১৫০ থেকে ২০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ১০০০ হাজার থেকে ৮০০ টাকা, বঁটি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চাপাতি ৮০০ থেকে ৭০০ টাকা বিক্রি হয়। আর পুরানোগুলো ধার দিতে লাগছে চাপাতি ১২০ থেকে ১৩০, ছুরি ৫০, জবাই করা ছুরি ১৫০ বোটি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। তবে শেষ সময়ে দাম নিয়ে ভাবছে না ক্রেতা । দাম যায় হোক প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে হবে। তাই তো যার যেটা লাগবে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।


বিবার্তা/শ্রাবণ/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com