লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের (ভারপ্রাপ্ত) পেশকার সফিয়ার রহমান সুমনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, জমির পর্চা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেয় পেশকার সুমন।
এতে বুধবার (১৭জুলাই) বিকেলে বিক্ষুব্ধ জমির মালিকরা সেটেলমেন্ট অফিসের (ভারপ্রাপ্ত) পেশকার সুমনকে তার নিজ অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে ঘুষের টাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জমির পর্চা না দিয়ে টালবাহানা করে সুমন। এতে বিক্ষুব্ধ জমির মালিকরা সুমনের কাছে জমির পর্চা চাইলে তিনি আবারো অতিরিক্ত টাকা দাবি করে। পরে জমির মালিকরা আরো অতিরিক্ত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানলে পেশকার তাদের হুমকি প্রদান করে। এর কিছুক্ষণ পরেই জমির মালিকরা উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের সামনে জড়ো হয়ে তার নিজ অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রবিউল হাসান অফিসে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই পেশকারের নিকট থেকে গ্রহণকৃত ঘুষের টাকা ফেরত ও উপযুক্ত বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, এ অফিসে জমিজমা সংক্রান্ত বিভিন্ন রকম পর্চা ও রেকর্ডের সংশোধন বাবদ কাগজপত্রে আইনের জটিলতা দেখিয়ে এলাকার জমি মালিকদের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত খরচ ছাড়াও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে পেশকার সুমনের বিরুদ্ধে।
তিনি দালালদের সাথে যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে এলাকার জমি মালিকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করেছেন। ম্যাপ-শিট তুলতে সরকারি ফি ছাড়াও দলিলের নকল রংপুর থেকে তুলে এনে দেয়ার নাম করে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা জমির মালিকগন জানান, পর্চার জন্য সেটেলমেন্ট অফিসের ভারপ্রাপ্ত পেশকার সুমন তাদের কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। কিন্তু দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় জমির পর্চা দিতে টালবাহানা শুরু করেন।
ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজ দুর্নীতিবাজ কালীগঞ্জ সেটেলমেন্ট অফিসের ভারপ্রাপ্ত পেশকার সুমনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগী।
এদিকে দীর্ঘদিন থেকে দায়িত্বে থাকা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের ফজলুর রহমান এ অফিসে কাগজে কলমে কর্মরত থাকলেও তিনি এখানে আসেন না বলে জানা-গেছে।
এ বিষয় জানতে চাইলে সেটেলমেন্ট অফিসার ফজলুর রহমান বলেন, আমি নিয়ম অনুযায়ী অফিস করে আসছি। ভারপ্রাপ্ত পেশকার সুমন যদি জমি মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে থাকে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে কালীগঞ্জে আসবেন বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউনও)সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগীদের নিকট থেকে পেশকার সুমন অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যতি তিনি অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তা ফেরত দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বিবার্তা/জিন্না/তাওহীদ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]