শিরোনাম
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি, প্লাবিত ৪০ গ্রাম
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০১৯, ১৫:২৭
মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি, প্লাবিত ৪০ গ্রাম
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানে পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের মনু নদের পানি বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার এবং ধলাই নদের ৬৩ সেন্টিমিটার ও কুশিয়ারা নদীর পানি ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


এরই মধ্যে ধলাই এবং কুশিয়ারা কয়েকটি জায়গায় ভাঙ্গন দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে অন্তত ৪০ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নদী ভাঙন ও বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করে জেলার কমলগঞ্জ ও সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। ত্রতে ৪০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানি-বন্দি হয়ে পড়েছে।


সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল ৩ টায় পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মনু নদীর পানি মৌলভীবাজারে চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদের ৬৩ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার পৌরসভাধীন রামপাশা, আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা, রহিমপুর ইউনিয়ন ও ইসলামপুর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।


এরমধ্যে রামপাশা ও ঘোড়ামারা এলাকায় ধলাইয়ের ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করেছে এবং ইসলামপুর ও রহিমপুর ইউনিয়ন ইউনিয়নে বাঁধ উপচে গ্রামাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে।


এদিকে, গত দুইদিন কমলগঞ্জ উপজেলায় প্লাবন দেখা দিলেও নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা। ইতোমধ্যে সদর উপজেলার হামোরকোনা এলাকায় কুশিয়ারার ভাঙন এবং ব্রাক্ষণ গ্রাম এলাকায় পানি উপচে খলিলপুর ইউনিয়নে প্লাবিত হয়েছে ছয়টি গ্রাম।


এ ছাড়া আখাইলকুরা ও মনুমুখ ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি-বন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক শতাধিক পরিবার।


অন্যদিকে, মনুর পানি বাড়তে থাকায় জেলার রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলায় বাঁধ উপচে নদী-পাড়ের কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানি বাড়তে থাকলে এই দুই উপজেলাও বন্যাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে সেসব এলাকার জন্য আগাম ত্রাণ বরাদ্দ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।


মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান জানান, খলিলপুর ইউনিয়নে দুই মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলার শেরপুর ও হামোরকোনায় দুটি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।


কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশেকুল হক জানান, এসব এলাকার সার্বিক খোঁজ নিয়ে শুকনো খাবার বিতরণ করা শুরু হয়েছে।


ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম খান জানান, বন্যার পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।


তিনি আরো জানান, বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের জন্য চার মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলায় সাত মেট্রিক টন চাল ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ হয়েছে। কুলাউড়া ও রাজনগরের আগাম এক হাজার মেট্রিক টন চাল ও ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ রয়েছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বলেন, যেখানে বাঁধ ভেঙেছে তার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ রয়েছে। পানি নামলেই কাজ শুরু হবে।


যদিও মনুর নদীর পানি ক্রমাগত বাড়ছে কিন্তু মনুতে এখন পর্যন্ত কোনো বাঁধ ভাঙেনি। সব পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাউবো প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।


বিবার্তা/তানভীর/তাওহীদ

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com