প্রায় ২৮ ঘণ্টা পর রাজশাহীতে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। জেলার চারঘাট উপজেলার দিঘলকান্দি এলাকায় লাইনচ্যুত তেলবাহী ট্রেনের আটটি ওয়াগন উদ্ধার শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় ট্রেন চলাচল। তবে সব যাত্রীবাহী ট্রেনই বেশ কয়েক ঘণ্টা করে শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে রাজশাহীগামী তেলবাহী আটটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। ওয়াগনটি ফারনেস তেল নিয়ে ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহী যাচ্ছিল। এ ওয়াগনে মোট ৩১টি বগি ছিল। এ ঘটনায় রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সারা দিন একটি একটি করে ওয়াগন লাইনে তোলা হয়। একই সঙ্গে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া রেললাইন মেরামত করা হয়।

দুর্ঘটনার পর পাবনার ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ক্রেন এসে রাত ৮টা ৪০ মিনিটে কাজ শুরু করে। তখন থেকে ক্রেনচালক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা মিলে প্রায় ২০০ জন মানুষ সারা রাত-সারা দিন উদ্ধার চালাচ্ছিলেন।

বৃহস্পতিবার রাতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম বলেন, সাড়ে ১০টার দিকে লাইনচ্যুত তেলবাহী ট্রেনটিকে লাইনে ওঠানো হয়েছে। এর এক ঘণ্টাখানেক পর ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামত হলে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

তিনি বলেন, খারাপ আবহাওয়া, তেলবাহী ট্রেনের পূর্ণ লোড এবং রেলট্র্যাকের ভয়াবহ ক্ষতির কারণে রেল যোগাযোগ সচল করতে প্রায় ২৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে। বিরতিহীন আন্তরিক কাজের মাধ্যমে এ বড় সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। যাত্রীবাহী ট্রেন যাত্রীদের কাছে তাদের দুর্ভোগের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি।

পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী আফজাল বলেন, বৃষ্টি ও রাত হওয়ার কারণে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় পুরোপুরি লাইন মেরামত করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকাল থেকে আবার মেরামত কাজ শুরু হয়। এর আগ পর্যন্ত এই এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এদিকে এ দুর্ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদকে তাৎক্ষণিক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঘটনা তদন্তে রেলওয়ের প্রধান পরিবহন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।

রাজশাহী রেলস্টেশন ম্যানেজার আবদুল করিম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় পদ্মা ট্রেনের ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে ট্রেনটি রাত ১১টার পর ছেড়ে যায়। এভাবেই প্রতিটি ট্রেনই কিছু শিডিউল বিপর্যয়ের মধ্যেই চলবে।

বিবার্তা/রবি/শারমিন