শিরোনাম
পাউবোর বিশাল কর্মযজ্ঞে আশান্বিত তীরবর্তী মানুষ
প্রকাশ : ২৩ মে ২০১৯, ১০:১১
পাউবোর বিশাল কর্মযজ্ঞে আশান্বিত তীরবর্তী মানুষ
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

প্রমত্তা যমুনার ভাঙন রোধে নদীর বাম তীর (টাঙ্গাইল অংশ) সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৮২.১৩ কোটি টাকা ব্যয়ের বিশাল কর্মযজ্ঞে স্থানীয় তীরবর্তী মানুষ আশান্বিত করে তুলছে। তাদের ধারণা, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিবছরের ন্যায় যমুনা আর তাদের বাড়ি-ঘর ও আবাদি জমি গ্রাস করতে পারবে না। তারা নির্বিঘ্নে নিজ ভূমিতে চাষাবাদসহ পাকা বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে পারবে।


টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর ক্রমাগত ভাঙন রোধ ও পানি প্রবাহ সঠিক রাখতে পাউবো টাঙ্গাইল অংশে গোপালপুর ও ভূঞাপুর উপজেলার ভরুয়া-বটতলা ও অর্জুণা প্রকল্প নামে দুইটি পৃথক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ভরুয়া-বটতলা প্রকল্পে ২৮১.৫৭ কোটি টাকা ও অর্জুণা প্রকল্পে ২০০.৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।


প্রকল্প দুটির মোট বরাদ্দের ৫১শতাংশ অর্থ নদী ড্রেজিংয়ের জন্য এবং বাকি ৪৯ শতাংশ অর্থ দিয়ে নদীর বাম তীরে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ভরুয়া-বটতলা প্রকল্পের ৩ কিলোমিটার নদী তীরে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১২টি গ্রুপে যথারীতি দরপত্র আহ্বান ও ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।


অর্জুণা প্রকল্পের ৩.৭৫০ কিলোমিটার নদীতীরে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ১৪টি গ্রুপে দরপত্র আহ্বান করে ১২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। বাকি দুটি গ্রুপের দরপত্র অহ্বানের প্রক্রিয়ায় থাকার ফলে ওই দুইটি গ্রুপের কাজ বন্ধ রয়েছে।



সূত্রমতে, ২৬টি গ্রুপের মধ্যে ২৪টি গ্রুপের কার্যাদেশ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে দেয়া হয়েছে। তারা যথারীতি ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে কাজ করছে। ইতোমধ্যে ২৪টি গ্রুপের মধ্যে ১৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নদী তীরে সিসি ব্লক বসিয়ে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অন্য ১১টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ চলমান রয়েছে। তবে তারা মোট কাজের ৪৫ শতাংশ সম্পন্ন করেছে।


সরেজমিনে দেখা যায়, ভূঞাপুর উপজেলার নদীর তীরে বিশাল এলাকা জুড়ে টেকবাই ইন্টারন্যাশনাল (Techbay International) নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিসিব্লক তৈরির কারখানা বসিয়েছে। দিনরাত সেখানে মানসম্মত (বুয়েটে পরীক্ষিত) সিসিব্লক নির্মাণ করা হচ্ছে।


ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার মোহম্মদ ফেরদৌস জানান, তারা বুয়েটের প্রকৌশলী দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে সিসিব্লক তৈরি করছেন। পরে সেগুলো পাউবোর প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারের অনুমতি পেলেই কেবল নদীর তীরে ব্যবহার করবেন।


স্থানীয় বাসিন্দা নাছির খান, বহরম তালুকদার, নাজিম উদ্দিন তালুকদার, এছহাক খাঁ, খায়রুল মণ্ডল, জমির বেপারীসহ অনেকেই জানান, নদী ভাঙনরোধে শুকনো মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ড সাধারণত কাজ করে না। এবার তারা ভিন্নতা দেখতে পাচ্ছেন।



তারা জানান, নদী শাসন ঠিকমতো করা হলে তারা বর্ষা মৌসুমে নিরাপদে বসবাস করতে পারবেন। ভাঙনরোধ হলে চাষাবাদসহ নিত্যনৈমিত্তিক কাজকর্ম নির্বিঘ্নে করতে পারবেন। তারা যথাসময়ে প্রতিরক্ষামূলক কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানান।


টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. গোলাম ফারওয়ার জানান, ভরুয়া-বটতলা ও অর্জুণা প্রকল্পের ২৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোট ৬.৭৫০ কিলোমিটার এলাকায় সিসিব্লক দিয়ে নদীর তীর প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করছে। এরমধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের ড্রেজিং অংশ ব্যতীত তীর প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার কাজ সম্পন্ন করেছে। বাকিগুলোর কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। নির্ধারিত সময়ের (২০১৯-২০ অর্থবছর) মধ্যে পুরো কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রকল্পের কাজের গুনগত মানে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তারপরও ২৪টি গ্রুপের ২৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে নদীর তীর প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার কাজ সম্পন্ন করতে পারবে বলে তিনি দাবি করেন।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/জহির

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com