শিরোনাম
অগ্নিদগ্ধ শিশু গৃহপরিচারিকা মিনা মৃত্যুর প্রহর গুনছে
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩১
অগ্নিদগ্ধ শিশু গৃহপরিচারিকা মিনা মৃত্যুর প্রহর গুনছে
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে অগ্নিদগ্ধ শিশু গৃহপরিচারিকা মিনার (১২) শরীরে পচঁন ধরায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে। সে উপজেলার নন্দপাড়া গ্রামের কাজী আব্দুল হকের মেয়ে।


গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পৌরএলাকার থানা পাড়ায় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজের সময় গ্যাসের চুলায় চা বানাতে গিয়ে মিনা অগ্নিদগ্ধ হয়। কিন্তু শফিকুল ও তার স্ত্রী আগুনে দগ্ধ মিনাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তার দরিদ্র বাবার বাড়িতে রেখে যায়। এরপর থেকে আব্দুল হক তার মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।


মেয়ের জীবন বাচাঁতে হতদরিদ্র পরিবারটি নিজের সহায় সম্বল হারিয়ে এবং ধারদেনা করেও মিনার সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছেন না। ঘটনার এতদিন অতিবাহিত হলেও সুচিকিৎসার অভাবে মিনার পুড়ে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে পচঁন ধরে ধীরে ধীরে সে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে।


আব্দুল হক অভিযোগ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি দিনমুজরের কাজ করে পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন-যাপন করে আসছিলাম। আমার সংসারের অভাবের সুযোগে পার্শ্ববর্তী সলিল গ্রামের সাধু মিয়া আমার মেয়েকে তার আত্মীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের বাসায় গৃহপরিচারিকার (ছেলে-মেয়ে দেখাশুনার) কাজ নিয়ে দেয়। কিন্তু ওই পরিবার আমার নাবালিকা মেয়েকে দিয়ে রান্না-বান্নার কাজ করাতে থাকেন।


তিনি বলেন, এক সময় সংবাদ পাই আমার মেয়ে মিনা হঠাৎ অসুস্থ হয়েছে। সেসময় আমি এবং আমার স্ত্রী মিনাকে দেখতে টাঙ্গাইলে শফিকুল ইসলামের বাসায় গেলে জানতে পারি আমার মেয়ে মিনা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। মিনাকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে মিনা সঙ্গাহীন অবস্থায় পড়ে আছে। সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মিনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করেন।


তিনি আরো বলেন, পরে শফিকুল কৌশলে আমার মেয়ে মিনাকে সদর হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় না নিয়ে আমার বাড়িতে রেখে যায়।


আব্দুল হক বলেন, এরপর থেকে ওই প্রকৌশলীর পরিবার আজ পর্যন্ত আমার মেয়ের চিকিৎসার কোনো খোঁজখবর নেয়নি। প্রথমে আমার সহায়সম্বল বিক্রি করে ও ধার-দেনা করে আমি আমার মেয়ে মিনার চিকিৎসা করালেও বর্তমানে অর্থের অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমি সমাজের বিত্তবান লোকদের কাছে আমার মেয়ের সুচিকিৎসায় সাহায্য কামনা করছি। পাশাপাশি যে পরিবারের কারণে আজকে আমার মেয়ের এই অবস্থা তাদের শাস্তি দাবি করছি।


সহবতপুর ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল মোল্লা বলেন, এ মর্মান্তিক এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমি আব্দুল হকের বাড়ি গিয়ে মিনার খোঁজখবর নেই এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। বর্তমানে সে বার্ন ইউনিটের ৩নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পরে আমি ওই শফিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মিনার চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থার কথা স্বীকার করলেও এখন ওই প্রকৌশলীর কোনো পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না।


এ ব্যাপারে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, মিনা আমার বাসায় কাজ করার সময় গ্যাসের চুলায় অগ্নিদগ্ধ হয়। আমি তার সকল প্রকার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।


বিবার্তা/তোফাজ্জল/জাকিয়া

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2021 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com