লক্ষ্মীপুরে শিশু শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগে শিক্ষক আটক
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ২২:১৫
লক্ষ্মীপুরে শিশু শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার, হত্যার অভিযোগে শিক্ষক আটক
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

লক্ষ্মীপুরে আল-মুঈন ইসলামী একাডেমী থেকে সানিম হোসাইন (৭) নামে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে ওই মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র এবং আবাসিকে থেকে লেখাপড়া করতো।


পরিবারের দাবি- মাদরাসার শিক্ষক মাহমুদুর রহমানের মারধরে শিশুটি মারা গেছে। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে 'টয়লেটে ঢুকে আত্মহত্যা' করেছে বলে শিক্ষকরা প্রচার করে। তবে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিক্ষক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে পুলিশ।


এদিকে মাদরাসার কক্ষে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ওই শিশুকে গামছা নিয়ে টয়লেটে ঢুকতে দেখা গেলেও বাহির হওয়া কোন দৃশ্য দেখা যায়নি।সানিমের মরদেহ ৩য় তলার টয়লেট থেকে শিক্ষকরা নিচতলায় নামিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে নামানোর ভিডিও দেখাতে পারেননি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।


মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় মাদরাসা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে দুপুরে সানিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়।


সানিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের কুচিয়ামারা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী হুমায়ুন মাতব্বরের ছেলে।


সানিমের মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না তার বাবা-মাসহ স্বজনরা। ছেলের শোকে মাদ্রাসার মেঝেতে বারাবার কান্নায় মুর্ছা যেতে দেখা যায় অসহায় বাবা-মাকে। সানিমের শোকে প্রায় অচেতন হয়ে পড়া তার বাবা হুমায়ুন মাতাব্বর ও মা জহুরা বেগমের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।


শিক্ষার্থী মৃত্যুর খরবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) রেজাউল হক ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা মাদরাসা শিক্ষক ও নিহত সানিমের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন।


সানিমের ফুফাতো ভাই বকশি মোহাম্মদ শাহিদ হোসাইন বলেন, সানিম ২০ পারা কোরআনে হাফেজ। ৩-৪ দিন আগে আমাদের কাছে খবর যায় সে নাকি হুজুরের কথা শোনে না, এমনকি হুজুরের নামে বদনাম করে। এনিয়ে হুজুর তার ওপর রেগে ছিল। মঙ্গলবার দুপুরে খবর পাই, সানিম নাকি টয়লেটে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়েছে। মাদরাসা এসে সেই হুজুরে কথা জিজ্ঞেস করতে সবাই বলেছে তাকে আটকে রাখা হয়েছে। সানিমের মৃতদেহ আমরা টয়লেটে পাইনি। তার মৃতদেহ মাদরাসার নীচতলার একটি কক্ষে বিছানায় পেয়েছি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা হত্যার বিচার চাই।


সানিমের কয়েকজন সহপাঠি জানায়, সকালে সানিমকে শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মারধর করেছে। তবে তারা তার মৃত্যুর কারণ তারা কেউ বলতে পারেনি। ঘটনার সময় কি হয়েছে, তাও তারা জানে না।


মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমেদ বলেন, ক্লাস শেষে সবাইকে নামাজ আর খাওয়ার বিরতি দেওয়া হয়। নামাজ পড়ে সবাই খেতে যায়। কিন্তু সানিম যাইনি। সিসি ক্যামেরায় দেখা যায় সে গামছা নিয়ে টয়লেটের প্রবেশ করে। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর-সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, মাদরাসা ছাত্র আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমরা এসেছি। তার গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।


বিবার্তা/সুমন/এসএস

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com