
নাটোরের গুরুদাসপুরে যৌতুকের দাবিতে চার সন্তানের জননী জেসমিন খাতুনকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার (৫ মে) বেলা ১১টায় দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রাণীগ্রাম উজিরপাড়া গ্রামে স্বামীর বাড়িতে রবিবার বিকেলে ওই হত্যাকান্ড ঘটে। জেসমিন পার্শ্ববর্তী তাড়াশ উপজেলার চরকুশাবাড়ি গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে।
এলাকাবাসী ও জেসমিনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বেগুন বিক্রির জন্য হাটে যাবেন স্বামী মজনু। দাড়িপাল্লা খুঁজে দিতে একটু দেরি হওয়ায় জেসমিনের বুকে ওজন মাপার পাথর দিয়ে আঘাত করেন তিনি। এরপর স্বামী ও শ্বশুড় হামিদ সরদার মিলে লাঠিপেটা করেন। জেসমিন অজ্ঞান হলে তার মুখের মধ্যে গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। জেসমিনের মৃত্যু নিশ্চিত জেনে পরিবারের সবাই পালিয়ে যায়।
রবিবার (৪ মে) রাতেই জেসমিনের লাশ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। জেসমিনের বাবা ইউসুফ আলী গুরুদাসপুর থানায় হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার পরদিন দোষীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাবেক ইউপি সদস্য মর্জিনা খাতুন, রুমা বেগম, হাফিজ ফকির, রুপালী বেগম, রানা আহম্মেদ, জাহাঙ্গীর হোসেন, আরিফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
জেসমিনের মা জবেদা, চাচা মজিদ, ভাবী রুমা সহ পরিবারের লোকজন অভিযোগ, বিয়ের সময় অনেক টাকা যৌতুক দিলেও জেসমিনকে নানাভাবে নির্যাতন করে আসছিলো স্বামী ও শ্বশুড়-শ্বাশুরী। গায়ের রং কালো ও পরপর তিন কন্যা সন্তান জন্ম দিলে সে দায় জেসমিনের ওপর চাপিয়ে নির্যাতনের করা হতো। এ নিয়ে অসংখ্যবার শালিসও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেসমিনকে লাশ হতে হলো।
সরেজমিনে গিয়ে অভিযুক্তদের বাসায় তালা ঝুলানো দেখা গেছে। মুঠোফোনও বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মজনুর চাচা খলিল সরদার বলেছেন, এটা হত্যা নয় আত্মহত্যা।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসমাউল হক জানান, হত্যা না অত্যাহত্যা ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। তারপর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিবার্তা/জনি/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]