
রাজশাহী মহানগরীর তালাইমারি শহিদ মিনার এলাকায় মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় এক বাবাকে নির্মমভাবে হত্যা করার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টার দিকে মহানগরীর তালাইমারি শহিদমিনার এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে এই বিক্ষোভ করেন ২৫ নং ওয়ার্ডেরে সর্বস্তরের জনগণ। বিক্ষোভ চলা সময়ে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে করে বাস, রিকশা, অটোরিকশাসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ বিকল্প রাস্তা দিয়ে যানবাহন যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ মর্মান্তিক এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম আকরাম হোসেন (৪৫)। তিনি পেশায় বাসচালক এবং রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। আকরামের বাড়ি তালাইমারি এলাকায়; তিনি আজাদ হোসেনের ছেলে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত আকরামের মেয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী রাকিয়া আলফিকে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের দ্বারা উত্ত্যক্ত হচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার প্রতিবাদ করেন আকরাম হোসেন। একপর্যায়ে উত্ত্যক্তকারীরা আকরামের বাড়িতে গিয়ে তাকে হুমকি দেয়।
বুধবার রাতে সেই বখাটের দল আকরামের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় এবং ইট দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে এলাকাবাসী ও পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে মো. নান্টু (২৮), মৃত রতন মিয়ার ছেলে মো. বিশাল (২৮), মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে খোকন মিয়া (২৮), মো. শাহীনের ছেলে তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২০), মো. নাহিদ (২৫) ও মো. শিশির (২০) এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।
আকরামে স্ত্রী ও তার মেয়ে এসএসি পরীক্ষার্থী রাকিয়া আলফি দাবি জানান, তারা দীর্ঘদিন হতে আমাকে উক্ত্যক্ত করে আসছিলো। সর্বশেষ তারা আমাকে অশ্লীল ভাবে গালি দেয়। আমি বিষয়টি বাড়ীতে এসে বাবা মাকে বলি। বাবা তাদের পরিবারকে সেটা বলতে গিয়েছিলো। এতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাবাকে রাস্তায় ঘিরেফেলে মারধর ও ইটের আঘাত করে। এতে আমার বাবা মারা যায়। আমাদের একটাই দাবি তাদের ফাঁসি হোক। আমরা আর কোন দাবি দিতে চাই না।
এলাকাবাসী জানান, আকরাম খুবই ভালো লোক ছিলো। তার মতো ভালো মানুষ নেই। আর যারা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তারা খুবই বাজে এবং নেশাগ্রস্থ। এলাকায় বখাটে হিসেবে চিহিৃত। তারা এলাকায় ভয়ংকার রুপ ধারণ করেছে। তারা যেনো ছাড়া না পাই। আমাদের একটাই দাবি তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হোক। নইলে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাবে।
ঘটনার বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, “তালাইমারিতে বখাটেদের হামলায় গুরুতর আহত হন আকরাম হোসেন। রামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
বিবার্তা/মোস্তাফিজুর/এসএস
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]