প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, সংঘর্ষে আহত ১০
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৩৩
প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ, সংঘর্ষে আহত ১০
হিলি, দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা অস্থায়ী মাঠে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টে বন্ধের দাবিতে এলাকার তৌহিদী জনতা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সদস্যদের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের প্রায় ১০-১৫ জন আহত হয়।


মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকাল ৩ ঘটিকার সময় উপজেলার আলিহাট ইউনিয়নের বাওনা অস্থায়ী মাঠে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের সাথে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজক কমিটির সদস্যদের মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে।


সরেজমিনে জানা যায়, বিজয় দিবস উপলক্ষে বাওনা ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে অস্থায়ী মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এরমধ্যে টিকিট করে প্রমীলা প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে আয়োজক কমিটি।


উক্ত খেলা বন্ধের দাবিইতে তৌহীদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছায়। এসময় সেখানে উপস্থিত হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায়, হাকিমপুর ঘোড়াঘাট সার্কেলের এএসপি আ ন ম নিয়ামত উল্লাহ, অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. সুজন মিঞা, তদন্ত ওসি জাহাঙ্গীর আলম সহ পুলিশের একটি দল দুই পক্ষের লোকজনের সাথে কথা পরিবেশ শান্ত এবং খেলা বন্ধ করার চেষ্টা করে।


এরপর প্রশাসনের লোকজন অস্থায়ী মাঠে গিয়ে আয়োজক কমিটির সাথে কথা বলছিল, এরমধ্যে কয়েকজন যুবক লাঠি তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ মিছিলের লোকজনের উদ্দেশ্য এগিয়ে যায়। এসময় দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়।


তৌহদী জনতার একজন অভিযোগ করে বলেন, বাওনা গ্রামের যুব সমাজের আয়োজনে বিজয় দিবস উপলক্ষে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে এরমধ্যে এই প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট এর আয়োজন করে। তখন আমরা এই খেলা বন্ধের দাবীতে প্রশাসনের নিকট স্মারকলিপি দেয় এবং বিক্ষোভ করি। তারা আমাদের আশ্বাস দেয় এই খেলা চলবে না। আজ আবার তারা এই চালু করার জন্য এলাকায় মাইকিং করে এবং মিথ্যা কথা বলে যে ডিসি মহোদয় অনুমতি দিয়েছে। আজ আমরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশ আমাদের বলে আপনারা শান্ত থাকেন আমরা বন্ধের ব্যবস্থা করছি। এরমধ্যে প্রশাসনের উপস্থিতিতে আয়োজক কমিটির লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং মারামারি সময় পুলিশ কোন ভূমিকা নেয় নাই। এমন কি পুলিশ বাঁশিতে ও ফু দেয় নাই। এতে আমাদের গালিব, আব্দুর রহমান, রায়হান সহ সাত জন ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।


হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত রায় জানান, প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে এখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমরা ঘটনা স্হলে উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের লোকজনদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কিছু লোকজন অতর্কিত হামলা চালায় ফলে সেখানে ৪-৫ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি এবং তাদের বিনা পয়সায় চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যারা এই খেলার সাথে জড়িত পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সেই সাথে এই মাঠের ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ সহ হাকিমপুর উপজেলায় কোন মাঠে প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে না বলে জানান তিনি।


হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সার্কেল এএসপি আ.ন.ম নিয়ামত উল্লাহ জানান, এখানে অনুমতি ছাড়ায় প্রমীলা ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমি ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে আয়োজক কমিটির ভালোর জন্য দশ মিনিট সময় দেই এবং তৌহিদী জনতাতকে খেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেয়। আমরা মাঠে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলে মাঠের চতুর্পাশের কাপড় খোলার ব্যবস্থা করি। এসময় তৌহিদী জনতার লোকজনের উপর অতর্কিত হামলা চালায় আয়োজক কমিটির কিছু লোকজন। এসময় পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় পুলিশ সেরকম কোন ভূমিকা নিতে পারে নাই। তবে পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


বিবার্তা/রববানী/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com