
গুরুদাসপুরে মাছ চাষিরা টাকা উদ্ধার ও প্রতারককে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে পুরুলিয়া বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মাছ চাষিসহ অন্তত ৫ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, আলম,ফারুক,শরিফুল,শাহাদৎ,মেহেদী,আলামিন,রইস সবাই মাছচাষি। তাদের নিকট থেকে বাকিতে মাছ মাছ কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করতেন পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির হিমু।
প্রথমদিকে নগদ মূল্যে লেনদেন করলেও পরবর্তীতে বিশ্বস্ততার সুযোগে বাকিতে মাছ কিনে মুঠোফোন বন্ধ রেখে লাপাত্তা ওই পুলিশ সদস্য। কর্মস্থলেও রয়েছেন অনুপস্থিত।
তাদের মতো এলাকার অন্তত ৫০ জন চাষিদের মাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকার মাছ বাকি নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন পুলিশ সদস্য হুমায়ন।
অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলার পুরুলিয়া গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।
ভুক্তভোগী আলম, ফারুক, শরিফুল, শাহাদৎ, মেহেদী, আলামিন, রইসসহ অন্তত ১০ জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অভিযুক্ত হুমায়ন কবির পুলিশ সদস্য হিসাবে (বিপি-৯৬১৫১৭৭০৭৭) পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত। পাশাপাশি চার বছর ধরে এলাকায় তিনি ও তার প্রতিনিধির মাধ্যমে মাছের ব্যবসা করেন। কিন্তু গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর দুমাসে চাষিদের অধিক লাভের প্রলোভন দিয়ে চড়াদামে বাকিতে মাছ কিনে রয়েছেন লাপাত্তা। শুধু গুরুদাসপুর নয় পার্শ্ববর্তী বড়াইগ্রাম, সিংড়া ও চাটমোহর উপজেলার অন্তত শতাধিক চাষিরা বাকিতে মাছ বিক্রি করে হয়েছেন প্রতারিত।
পুরুলিয়ার রইস উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, তিনি গত মাসের শুরুতে হুমায়ুনের কাছে বাকিতে ৩৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকার ৮ গাড়ি মাছ বিক্রি করেন। ১৫ দিন পর টাকা দেবার কথা বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে পলাতক রয়েছেন হুমায়ুন। তিনি টাকা ফেরতসহ তার শাস্তির দাবি জানান।
একই এলাকার আলম জানান, তিনিও ওই প্রতারকের কাছে ১৬ লাখ ১১ হাজার টাকার ৪ গাড়ি মাছ বিক্রি করেছেন। টাকার জন্য চাপসৃষ্টি করলে তাকে ইসলামী ব্যাংকের একটি চেক দেয়া হয়। তারমতো অন্তত ১০ জন চাষিকে ব্যাংক চেক দেয়া হয়। টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে তারা দেখেন প্রতারক হুমায়ন আগেই ওই নম্বরের চেকবই হারিয়ে গেছে মর্মে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। ভুক্তোভোগী চেক নিয়েও প্রতারিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
টাকা ফিরে পেতে উজ্জল হোসেন বাদী হয়ে ১৫ জানুয়ারী গুরুদাসপুর থানায় প্রতারক হুমায়ুন ও তার ৮ সহযোগীর নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপরদিকে মকলেছুর রহমান নামে অপর মাছ চাষি সিংড়া থানায় এবং পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন। এত অভিযোগের পরেও ওই প্রতারক রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অভিযুক্ত প্রতারক পুলিশ সদস্য হুমায়ন কবিরের ব্যবহৃত মুঠোফোন (০১৭....৯৭৭) নম্বরে ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায় বলে বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাসায় গিয়েও পরিবারের কোন সদস্যকে পাওয়া যায়নি।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, হুমায়ন কবিরের নামে চাছ চাষিদের একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুত্ব সহকারে অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাকে আটকের চেষ্টাও চলছে।
বিবার্তা/জনি/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]