
নাটোরের গুরুদাসপুরে চিরকুট লিখে একরাতে ১৪টি বৈদ্যুতিক শিল্প মিটার চুরি করেছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র।
রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাণিজ্যিক এলাকার বেশকয়েকটি ‘স’ মিল, ওয়ার্কশপ, রাইসমিল, আইসক্রিম মিল থেকে ওই মিটারগুলো চুরি হয়। চোরদের লিখে রাখা বিকাশ নম্বরে টাকা দিলে চুরির মিটার মিললেও তারা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
সরেজমিনে মিল মালিক ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চাঁচকৈড় বাজার পাড়া, মধ্যমপাড়া ও পুড়ানপাড়া মহল্লার মোস্তফা, তাজ সরকার, মহাতাব সরকার, আমিরুল ইসলামসহ ১৪ জনের শিল্প কারখানার বিদ্যুতের মিটার চুরি হয়ে গেছে।
সকালে প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তারা দেখেন, বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে মিটার খুলে নিয়ে চোরচক্র চিরকুটে মোবাইল নম্বর লিখে ঝুলিয়ে দিয়ে গেছে। সেখানে লেখা ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ০১৮.....৪৯২ নাম্বারে কল করুন। পরবর্তীতে ওই নাম্বারে কল করলে মিটার প্রতি ৫ হাজার টাকা বিকাশে চাওয়া হয়। বিকাশ করলেই চোরের নির্ধারিত স্থানে মিলছে মিটার।
এর আগে গত বছরের ৫ জুলাই একরাতে একই কায়দায় গারিষা পাড়া এলাকায় ১৩ টি মিটার চুরি হয়। তারাও চোরের সাথে সমঝোতা করে টাকা দিয়ে মিটার ফিরে পান। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটলেও চোর চক্রের সদস্যরা রয়েছে অজানা।
ভুক্তভোগী জামাল হোসেন বলেন, চোরের বিকাশ নাম্বারে ৫ হাজার করে টাকা দেওয়ার পর চোরের দেয়া নির্ধারিত স্থান থেকে মামুন সরকারের দুটি, আলামিন, মালেক সরকার ও হাফিজুল ইসলাম মিটার ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু টাকা দিয়েও আমার মিটার ফিরে পাইনি। তারা বলেছে, একই স্থানে আমারসহ আরো দুজনের মিটার লুকানো আছে। অন্য দুজনের টাকা পেলেই মিটার তিনটি একসাথে ফেরত দেবে।
থানায় অভিযোগ প্রসঙ্গে আরেক ভুক্তভোগী মাহাতাব সরকার জানান, এর আগেও চুরি যাওয়া মিটার ফিরে পেতে থানায় অভিযোগ দিয়েও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে চোরের সাথে সমঝোতা করে মিটার ফিরে পেতে চেষ্টা করছি। এদিকে বিদ্যুৎ অফিসের মাধ্যমে নতুন মিটার সংযোগ পেতে সময় ও অর্থ দুটোই ব্যয় হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হন।
নাটোর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মমিনুর রহমান বিশ্বাস বলেন, চুরি ঠেকাতে গ্রাহকদের মিটারে লোহার খাঁচা লাগানোর নির্দেশনা দিলেও কেউ মানছেন না। ইতিপূর্বে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। তিনি চোর চক্রকে ৫ হাজার টাকা না দিয়ে পল্লি বিদ্যুৎ অফিসে ৬ হাজার টাকা খরচ করে নতুন মিটার নিতে পরামর্শ দেন। চোরদের টাকা দেওয়া বন্ধ করলেই চুরি রোধ সম্ভব বলে জানান তিনি।
নাটোর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার বিপ্লব কুমার সরকার দুঃখ প্রকাশ করে থানায় অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেন এবং এ ব্যাপারে সামাজিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, মিটার চুরির খবর শুনেছি। কিন্তু অভিযোগ পাইনি। তবে চোর ধরতে ও মিটার উদ্ধারে কাজ করছে থানা পুলিশ।
বিবার্তা/জনি/জেএইচ
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]