
বান্দরবানের লামায় বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে এক গর্ভবর্তী নারী হাতির মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দিনগত রাতে উপজেলার ফাঁসিয়াখালীর কুমারী এলাকার চাককাটা ঝিরিতে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত হাতিটির বয়স আনুমানিক ৩০ বছর হবে বলে ধারণা করছেন বন বিভাগ কর্মকর্তারা।
অপরদিকে বিছইন্নার ঘোণায় লাউ ক্ষেত পাহারার সময় সোমবার দিনগত রাতে বন্যহাতির আক্রমণে ফরিদুল আলম (২৭)
নামের এক কৃষক প্রাণ হারান।
মৃত ফরিদুল আলম চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের উত্তর ঘুনিয়া পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা মৃত আলী আহমদের ছেলে। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে চাক কাটার ঝিরির কৃষক ফরিদুল আলমের জমিতে হাতিটির মৃতদেহ পাওয়া যায়।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময় গভীর জঙ্গল থেকে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে হাতির পাল। হানা দিয়ে ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, মানুষ ও বাগানের ক্ষয়ক্ষতি করে। এ থেকে
রক্ষা পেতে বাগান ও ফসলি জমির চার পাশে অনেক সময় বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেন স্থানীয়রা।
সোমবার দিনগত রাতে বুনো হাতির পাল খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে এলে হাতিটি বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার অধিবাসীরা বলেন, সম্ভবত হাতিটি রোগাক্রান্ত ছিল। এ কারণে মারা গেছে সেটি। এর আগে লাউ ক্ষেত পাহারা
দেওয়ার সময় অন্য একটি পুরুষ বন্য হাতি কৃষক ফরিদুল আলমের উপর আক্রমণ চালায়।
পরে আহতকে উদ্ধার করে কাছাকাছি চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ফরিদুল আলমকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার মো. আলী আকবর। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা এ. কে. এম আতা এলাহী জানান, বৈদ্যুতিক ফাঁদেই হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মৃত হাতিটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। এটির
প্রাথমিক সুরতহাল ও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য সেগুলো চট্টগ্রাম পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে ফেলে হত্যা করা হয়েছে নাকি, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আপাতত এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে এর একশ গজ দূরে হাতিটির
আক্রমণে কৃষক ফরিদুল আলমের মৃত্যু হতে পারে বলে জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা এ.কে. এম আতা এলাহী।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন জানায়, হাতির আক্রমণে নিহত কৃষকের মরদেহ মঙ্গলবার সকালে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাতি মৃত্যুর ঘটনায় বন বিভাগ অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতির মৃত্যুর সত্যতা পাওয়া গেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। পাশাপাশি হাতির আক্রমণে নিহত কৃষক ফরিদুল আলমের পরিবারকে বন বিভাগের বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণের দেওয়া হবে। পাহাড়ে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় বন্যহাতির পাল লোকালয়ে খাবারের সন্ধানে হানা দেয়।
বিবার্তা/নুরুল/মাসুম
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]