রাজশাহী পুলিশ লাইনস্ স্কুলে শিক্ষার্থীদের রোষানলে পুলিশ
প্রকাশ : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:২২
রাজশাহী পুলিশ লাইনস্ স্কুলে শিক্ষার্থীদের রোষানলে পুলিশ
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রিন্ট অ-অ+

রাজশাহীতে অবস্থিত শহীদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইনস্ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষের রুমের তালা ভেঙে ড. গোলাম মওলাকে পুনরায় তার কক্ষে বসিয়ে দিয়েছেন কলেজটির একাংশের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১১ টায় এই ঘটনার আগে কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামের কাছে অধ্যক্ষের রুমের চাবি চাইলে তিনি জানান, কলেজ কমিটির সভাপতি আরিএমপির কমিশনারের অনুমতি ছাড়া তিনি চাবি দিতে পারবেব না। পরে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুমের তালা ভেঙে ফেলে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করে। কয়েকজনকে ধরে পুলিশের গাড়িতে তুললে কলেজে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ পুলিশের সঙ্গে শিক্ষাথীদের ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের রোষানালে পড়ে পুলিশ। মেইন গেট বন্ধ করে দিয়ে বাঁশ নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে যান শিক্ষার্থীরা।


অধ্যক্ষের ইস্যু নিয়ে শিক্ষার্থী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করেছে বেশ কয়েক ঘণ্টা। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চার্জও করে দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের সদস্যরা। অবশেষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জোর করে পুলিশের পিকআপ ভ্যানে তোলেন সিআরটি ও পুলিশের সদস্যরা। অধ্যক্ষের বিশেষ অনুরোধ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের ভ্যানে তোলেন তারা। তবে, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসলে শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয়া হয়।


গত ৫ আগস্টের পর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একাংশের চাপের মুখে কলেজের অধ্যক্ষ ড. গোলাম মওলাকে অপসারণের নির্দেশ দেন আরএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার। অবৈধ ও জোরপূর্বক অপসারণকে চ্যালেঞ্জ করে ঐ সময় আদালতের আশ্রয় নেন অধ্যক্ষ গোলাম মওলা। গত ১৫ ডিসেম্বর তার পক্ষে রায় ঘোষণা করে মহামান্য আদালত।


সোমবার সকালে তিনি উচ্চ আদালতের সেই রায়ের কপি নিয়ে কলেজে আসেন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করতে। কিন্তু তাতে কাল হয়ে দাঁড়ান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম। তিনি তালাবদ্ধ কক্ষের চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় ব্যক্তিরাও উপস্থিত হয় কলেজ প্রাঙ্গনে। সকলে মিলে দাবি তোলেন অধ্যক্ষ স্যারকে নিজ কক্ষে প্রবেশ করতে দিতে হবে। পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যাওয়া মাত্রই দায়িত্বরত অধ্যক্ষ প্রশাসনের সহায়তা চান।


জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে কোন প্রকার মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, কলেজের গভর্নিং বডি যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত। উচ্চ আদালতের নির্দেশ আপনি কেন মান্য করলেন না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলতে চাই না, বলেই দ্রুতগতিতে কলেজ প্রাঙ্গন ত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম।


অধ্যক্ষ গোলাম মওলার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে উচ্চ আদালতে রায় আছে। মহামান্য আদালতের রায় আমার পক্ষে থাকার পরেও আমাকে কেনো এভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে সেটি এখনো বুঝতেছি না। পুলিশ কমিশনার স্যারের সাথে দেখা করতে চাইলেও তিনি আমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন না। আগামীকাল (৩১ ডিসেম্বর) আপনি কি কলেজে আসবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যথাসময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবো।


বিবার্তা/মোস্তাফিজুর/এসবি

সর্বশেষ খবর
সর্বাধিক পঠিত

সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি

এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)

১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫

ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫

Email: [email protected], [email protected]

© 2024 all rights reserved to www.bbarta24.net Developed By: Orangebd.com