
'আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে একাধিক রাজনৈতিক দল আসবে। তবে জাতীয় নাগরিক কমিটি কখনোই কোন রাজনৈতিক দল হবে না। জাতীয় নাগরিক কমিটি একটি রাজনৈতিক শক্তি। রাজনৈতিক দল রেজিস্ট্রেশন করে সরাসরি রাজনীতি করে ভোটের নির্বাচনে যায়। জাতীয় নাগরিক কমিটি আগামীর বাংলাদেশে লিডারশিপ তৈরি করবে। পাশাপাশি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। একই সাথে এটি জাতীয় পর্যায়ের একটি ইন্সটিটিউট হবে।'
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে জাতীয় নাগরিক কমিটি পঞ্চগড়ের আয়োজনে এক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।
এসময় তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা সৈরাচার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে দেশে লিডার তৈরি হয় নি, তৈরি হয়েছে কিছু দাস আর নিরব কিছু দর্শক। আগামীর বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যদি উন্নয়ন করতে চাই তাহলে আগে আমাদের লিডার তৈরি করতে হবে। লিডার হিসেবে যাদের শিক্ষা, দক্ষতা ও জ্ঞান থাকবে। লিডার হিসেবে এই মানসিকতা থাকবে যে কেউ অনুসারি না সবাই সহযোদ্ধা। এই অভ্যুত্থানে যারা ছিলো তাদের নিয়েই হয়তো এই রাজনৈতিক দল আসবে। তবে যে রাজনৈতিক দলে যাবে তারা নাগরিক কমিটিতে থাকতে পারবে না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ যদি ওই রাজনৈতিক দলে যেতে চায় তাহলে তাকে তার সব পদ ছেড়ে যেতে হবে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন তার জায়গাতেই থাকবে। আবার যদি কেউ ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠে তার বিরুদ্ধে আবারো এখান থেকেই যে কেউ আন্দোলনের ডাক দিতে পারবে ।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৬ বছরে উন্নয়ন দেখিয়েছে মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু, এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলি টানেলের মতো কিছু অবকাঠামো দিয়ে। কিন্তু একটা দেশের উন্নতি কেবল কিছু অবকাঠামো দিয়ে হতে পারে না। এই অবকাঠামোগুলো মানুষের চোখের সামনে দিয়ে ভেতরে ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচার করা হয়েছে। কেউ যখন কোন অবকাঠামোকে উছিলা করে লুটপাটের সাম্রাজ্য চালায় তখন তা বৃহৎ অর্থে দেশের জন্য সমস্যা। যেই প্রকল্প ২০ হাজার কোটি টাকায় হয়ে যেতো সেই প্রকল্প চুরি বাটপারি সিন্ডিকেট লুটপাট স্বজনপ্রীতি করে ৩৫ হাজার কোটি টাকায় ঠেকায় তখন সেটি দেশের জন্য সমস্যা। পদ্মা সেতু করার পরে পদ্মাসেতু রেলওয়ে প্রকল্পে ৪০ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ১ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। চীন এই প্রকল্পে যখন সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসে তখন ভারতের দিকে তাকিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তখন এই প্রকল্প আর সামনের দিকে আগায় না তখন তা বাংলাদেশের জন্য সমস্যা।
তিনি বলেন, একটা সিস্টেম ধ্বংস করতে সময় লাগে না। কিন্তু গড়তে সময় লাগে। আমরা তাৎক্ষণিক রেজাল্ট চাই। আমাদের মগজে মননে দাসত্ব ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনা দেশে তদবিরের সংস্কৃতি তৈরি করেছে। এখনো আমার কাছে তদবির আসে। এটি দু'একদিনে শেষ হবে না। সময় লাগবে। আমরা দেখাবো যে তদবির ছাড়াও কাজ হয়।
বিবার্তা/গোফরান/এসবি
সম্পাদক : বাণী ইয়াসমিন হাসি
এফ হক টাওয়ার (লেভেল-৮)
১০৭, বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, ঢাকা- ১২০৫
ফোন : ০২-৮১৪৪৯৬০, মোবা. ০১৯৭২১৫১১১৫
Email: [email protected] , [email protected]